কখনো সবজি বিক্রি, কখনো পরিবহন শ্রমিকের কাজ করে চলে আটজনের সংসার। এর মধ্যেই টাকা জমিয়ে প্রতিবছর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীতে গরীবদের খাওয়ান শেরপুরের নবীনগর এলাকার বাসিন্দা শেখ মমতাজ উদ্দিন। আর এই কাজটি করে যাচ্ছেন গত ৩০ বছর ধরে।
আজ রবিবার (১৪ আগস্ট) তার বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, উঠানে হাড়ি-পাতিল ও লাকড়ির স্তূপ। চলছে চুলা তৈরির কাজ। পাশে চেয়ারে বসে তদারক করছেন মমতাজ।
তিনি জানান, প্রয়াত বাবার (ফজি শেখ) নির্দেশেই জাতির জনকের প্রতি ভালবাসা থেকে গত ৩০ বছর ধরে শোক দিবসে মেজবানের আয়োজন করছেন তিনি। এবারও নিজের ও সন্তানদের জমানো টাকা দিয়ে প্রায় ৬০০ মানুষের জন্য খিচুড়ি, জিলাপি ও বিরিয়ানির আয়োজন করছেন তিনি। যতদিন বেঁচে থাকবেন, ততদিন এ আয়োজন করে যাওয়ার ইচ্ছা তার।
তিন ছেলে, তিন মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে মমতাজের সংসার। কখনও সবজি বিক্রি করেন, আবার কখনও পরিবহন শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন তিনি। তিন ছেলেও বাবার মতোই দিনমজুর।
মমতাজ জানান, এ আয়োজনের জন্য তিনি কারও কাছে হাত পাতেন না। নিজের ও সন্তানদের জমানো টাকা দিয়েই আয়োজন করেন। তবে অনেকে এসে দু-একশ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেন। এতে আরও বেশি মানুষকে খাওয়াতে পারেন। সবার সহযোগিতায়ই তিনি কাজটি করে যেতে পারছেন।
জেলা সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান বলেন, ''শেখ মমতাজ দীর্ঘদিন ধরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে জাতির জনকের জন্য তার বাড়িতে মেজবান করে আসছেন। অনেকের সামর্থ্য থাকার পরও কিছুই করে না। কিন্তু দিনমজুর মমতাজ প্রতি বছরই জাতীয় শোক দিবসে মেজবান করেন।''
বাবুর্চি মো. উজ্জ্বল মিয়া বলেন, ''শেখ মমতাজ গরীব হলেও ৩০ বছর ধরে শোকদিবসে মেজবান করে আসছেন। আমি ১০/১২ বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে রান্নাবান্না করে দিচ্ছি তাকে। এতে শরিক হতে পেরে নিজেরও ভালো লাগে।''- সূত্র: বিডিনিউজ।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ