অবৈধ, নকল ও নিম্নমানের মোবাইল ফোন সেটে ছেয়ে গেছে দেশের বাজার। বিভিন্ন সময় ফোন কোম্পানিগুলো লোভনীয় অফার ঘোষণা করে এসব ফোনসেট বিক্রি করছে। আর কোম্পানিগুলোর চটকদার অফারে এসব মোবাইল ফোন কিনে একদিকে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ, অন্যদিকে বড় অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একটি মোবাইলে কিনলে আরেকটি ফ্রি, কিংবা মোবাইলের সঙ্গে টক টাইমসহ সিম কার্ড ফ্রি এবং এমনকি মোবাইলের সঙ্গে অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। শুধু তাই নয়, নামিদামি ব্রান্ডের লোগো ব্যবহার করেও সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন তারা। নকল ও কভার পাল্টানো এসব নিম্নমানের মোবাইল ফোন সেট দেখে কারো বোঝার উপায় নেই যে, কোনটি আসল আর কোনটি নকল। আর যারা প্রতারিত হচ্ছেন তাদের বেশির ভাগই নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ। একটু অল্প টাকায় ভালো ফোন সেট পাওয়া আশায় তারা প্রলোভনে পা দিয়ে সর্বনাশ ডেকে আনছেন।
কারণ ওয়ারেন্টি কিংবা গ্যারান্টি ছাড়া বিক্রি করা নিম্নমানের এই ফোনগুলো কিছু দিন পরেই অকার্যকর হয়ে পড়ছে। বাধ্য হয়ে মেরামত করতে গেলেও তখনই গ্রাহকরা জানতে পারেন তিনি প্রতারণা শিকার হয়েছেন। সার্ভিস চার্জের জন্য যে অর্থ তার কাছ থেকে দাবি করা হয়, দেখা যায় এক ফোন সেটের মূল্য তার চেয়েও ঢের বেশি।
সূত্র জানিয়েছে, বিটিআরসির অনুমোদন নিয়েই হ্যান্ডসেট আমদানি করা হলেও প্রতিনিয়ত লাখ লাখ নকল মোবাইল সেট দেশে আসছে। চিহ্নিত কিছু ব্যবসায়ী এই সেটগুলো কম দামে কিনে দেশে এনে দ্বিগুণ-তিন গুণ দামে বিক্রি করছে। নামিদামি মোবাইল কোম্পানির নামে এই হ্যান্ডসেটগুলো বাজারে চলছে। বেশিরভাগ গ্রাহক কোনটা আসল আর কোনটা নকল এটা না জেনেই সেট কিনছেন।
বাংলাদেশ মোবাইল ফোন বিজনেসম্যান এসোসিয়েশনের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাংলাদেশের বাজারে প্রতি বছর এক কোটিরও বেশি মোবাইল ফোন সেট বিক্রি হয়। আর প্রতি মাসে যেসব ফোনসেট বিক্রি হয় তার মধ্যে ২ হাজার টাকা মূল্যের ফোনসেট সবচেয়ে বেশি প্রায় ৬০ শতাংশ। এছাড়া ২ থেকে ৫ হাজার টাকা মূল্যের ৪০ এবং ৫ হাজার টাকার উপরে বিক্রি হয় প্রায় ১০ শতাংশ। দেশের নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষ ২ হাজার টাকা মূল্যের ফোন সেটই বেশি ব্যবহার করে থাকেন।