তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের বঙ্গোপসাগরের সীমানায় মৎস্য সম্পদ জরিপ ও গবেষণা কাজের কোনো জাহাজ ছিল না। দীর্ঘ ৩১ বছর পর মালয়েশিয়া থেকে ‘আরভি মীন সন্ধানী’ নামে একটি জাহাজ নামাবে সমুদ্র অধিদপ্তর। আগামী ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। গত ৬ জুন জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙ্গর করে।
সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ দপ্তর চট্টগ্রাম সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৪-৮৬ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) কারিগরি সহায়তায় এবং দেশীয় সামুদ্রিক মৎস্য বিজ্ঞানীদের সম্পৃক্ততায় ‘আরভি অনুসন্ধানী’ জাহাজ যোগে সর্বশেষ জরিপ পরিচালিত হয়েছিল। জরিপে তলদেশীয় মাছের মজুদ ১০-১০০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত ১ লাখ ৫৭ হাজার মেট্রিক টন, ১০-২০০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত ১ লাখ ৮৮ হাজার মেট্রিক টন এবং সহনশীল পর্যায়ে আহরণযোগ্য মাছের পরিমাণ ৭৪ হাজার ৫০০ থেকে ৮৮ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ছিল। কার্যতঃ এরপর আর জরিপ কাজ পরিচালিত হয়নি।
সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ দপ্তর চট্টগ্রামের পরিচালক (মেরিন) নাসিরুদ্দিন মো. হুমায়ুন বলেন, আধুনিক সর্বশেষ প্রযুক্তি দিয়ে মালয়েশিয়ার তৈরি আরভি মীন সন্ধানী ৬৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকায় ক্রয় করা হয়েছে। আগামী ১৯ নভেম্বর এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার কথা। এ লক্ষ্যে আমরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছি। তিনি বলেন, আইডিবির অর্থায়নে ‘বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ ক্যাপাসিটি বিল্ডিং’ শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে এ বৈজ্ঞানিক জাহাজটি ক্রয় করা হয়েছে। এ জাহাজ দিয়ে সমুদ্রের পরিমাপ, সামুদ্রিক মাছ নিয়ে গবেষণা, মাছের টেকসই আহরণ কৌশল নির্ধারণ, সমুদ্রের স্বাস্থ্য চিত্র নির্ধারণ, কোন জায়গা কী রকম মাছ বিচরণ করে, সমুদ্রের কোন অংশে কোন প্রকারের ট্রলার যাবে তা নির্ধারণসহ মৎস্য নিয়ে সামগ্রিক সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।
জানা যায়, আরভি মীন সন্ধানী জাহাজের দৈর্ঘ্য ৩৭ দশমিক ৮০ মিটার। ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি) ও মালয়শিয়া সরকারের যৌথ অর্থায়নে ক্রয় করা এ জাহাজে কাজ করতে পারেন ২৮ জন ক্রু ও গবেষক। মূল ইঞ্জিনের ক্ষমতা ১৪০০ হর্স পাওয়ার, ১৮০০ আরএমপি।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিরোধ নিস্পত্তি হওয়ায় বর্তমানে এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার টেরিটোরিয়াল সমুদ্র ও ২০০ নটিক্যাল মাইল অর্থনৈতিক অঞ্চল রয়েছে বাংলাদেশের অধিকারে। এর মধ্যে তটরেখা থেকে ৪০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে ৩২ হাজার ৪৪০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় প্রায় ৬৮ হাজার যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক ছোট ট্রলার এবং জেলে নৌকা দিয়ে মাছ ধরে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ