ভারতের শীর্ষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইআইটি বোম্বে সাম্প্রতিক ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সকল প্রকার যৌথ চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাকিস্তানের প্রতি তুরস্কের সামরিক সহায়তা এবং রাজনৈতিক সমর্থনের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
শনিবার (১৭ মে) এক ঘোষণায় আইআইটি বোম্বে জানায়- তুরস্ককে ঘিরে বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে আমাদের সকল একাডেমিক চুক্তি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হচ্ছে।
জানা গেছে, ভারতের পেহেলগেম হামলার জবাবে চালানো অপারেশন সিন্ধুর সময় পাকিস্তানকে তুরস্কের ড্রোন সহায়তা ভারতের কাছে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। ভারতীয় ভূখণ্ডে উদ্ধারকৃত তুর্কি ‘কামিকাজে ড্রোন’ এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চালানো ড্রোন হামলায় তুরস্কের জড়িত থাকার অভিযোগ সামনে আসে। একইসঙ্গে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যিপ এরদোয়ান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করে সমর্থনের বার্তা দেন। এছাড়াও ছয়টি সামরিক বিমান ও একটি যুদ্ধজাহাজ পাকিস্তানে পাঠানো হয় বলে জানা গেছে।
এই প্রেক্ষাপটে তুর্কি পণ্য বর্জন এবং তুরস্কের সঙ্গে সকল প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিন্ন করার আহ্বান ভারতজুড়ে জোরালোভাবে উঠেছে। আইআইটি বোম্বে’র আগে ভারতের অন্যান্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) এবং জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া ইতোমধ্যে তুরস্কের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ কর্মসূচি স্থগিত করেছে।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তুরস্কের ইনোনু ইউনিভার্সিটি-র সঙ্গে করা সমঝোতা স্মারক জাতীয় নিরাপত্তা বিবেচনায় স্থগিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সন্তীশ্রী ধুলিপুদি পণ্ডিত বলেন, জাতীয় স্বার্থে জেএনইউ সবসময় দেশের পাশে, কারণ আমাদের অনেক প্রাক্তন ছাত্রই আজ সেনাবাহিনীতে কর্মরত।
উল্লেখ্য, গত ৩ ফেব্রুয়ারি স্বাক্ষরিত এই চুক্তিটি তিন বছরের জন্য কার্যকর ছিল, যার আওতায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বিনিময়সহ একাডেমিক গবেষণার সুযোগ ছিল।
অন্যদিকে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তুরস্কের যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা তুর্কি কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনো ধরনের সহযোগিতা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
শুধু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নয়, শারদা ইউনিভার্সিটি (নয়ডা) ও কানপুর বিশ্ববিদ্যালয়-সহ একাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও তুরস্কের সঙ্গে তাদের একাডেমিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। শারদা ইউনিভার্সিটি ইতোমধ্যে ইস্তাম্বুল আইদিন ইউনিভার্সিটি এবং হাসান কালিওনকু ইউনিভার্সিটি-এর সঙ্গে করা চুক্তি বাতিল করেছে।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ও তাদের আন্তর্জাতিক চুক্তিসমূহ পর্যালোচনার প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলে জানিয়েছে এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আমরা সব চুক্তি খতিয়ে দেখছি, এবং পরিপূর্ণ পর্যালোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তথ্য সূত্র- ইন্ডিয়া টুডে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ