পরিবহন মালিকদের ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জের ধরে বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলে ঢাকাগামী কোচ চলাচল বন্ধ রয়েছে। আজ সকাল ৬টা থেকে ঢাকাগামী সকল কোচ চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শহরতলির চারমাথা এলাকায় রাজশাহী বিভাগীয় মোটর শ্রমিক আঞ্চলিক কার্যালয়ে জরুরি বৈঠক শেষে মঙ্গলবার রাত ১০টায় বিভাগীয় মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ এ সিদ্ধান্ত নেয়।
আজ বেলা ১১ টায় বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের যুগ্ম আহবায়ক ও শাহ্ ফতেহ আলী পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, উত্তরের জেলাগুলোতে ঢাকাগামী কোচ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে সংগঠনের সভাপতি আব্দুল লতিফ মন্ডলের সভাপতিত্বে মোটর মালিক গ্রুপের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের আহবায়ক মঞ্জুরুল আলম মোহন বুধবার সকাল ৬টা থেকে উত্তরাঞ্চলের ১১ জেলার সাথে অনিদিষ্টকালের জন্য ঢাকাগামী কোচ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেন।
জেলাগুলো হলো বগুড়া, নওগাঁ, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বগুড়ার ‘শাহ্ ফতেহ আলী’ পরিবহনের প্রায় ২০টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস বগুড়া থেকে ঢাকার মহাখালী রুটে চলাচল করে। পক্ষান্তরে ঢাকার পরিবহন মালিকদেরও বেশ কয়েকটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস ঢাকা থেকে রংপুর পর্যন্ত চলাচল করে। সবমিলিয়ে অর্ধশত এসি বাস চলাচল করে। সম্প্রতি ঢাকার পরিবহন মালিকদের পক্ষ থেকে ব্যবসায়িক ক্ষতির অজুহাতে বগুড়ার শাহ্ ফতেহ্ আলী পরিবহনের চলাচলকারী শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসগুলো ঢাকা-বগুড়া রুটে না চালানোর জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু বগুড়ার মালিক পক্ষ সেই অনুরোধ প্রত্যাখান করলে ঢাকার পরিবহন মালিকরা অসন্তুষ্ট হন এবং সোমবার বিকেলে প্রথমে মহাখালী বাস টার্মিনালে শাহ্ ফতেহ্ আলী পরিবহনের টিকিট কাউন্টার বন্ধ করে দেন। এরপর তারা ঢাকার গাবতলীতেও শাহ্ ফতেহ আলী পরিবহনের কাউন্টার বন্ধ করে দেন। এতে ওই পরিবহনের বাসগুলো ঢাকায় আটকে পড়ে। এ খবর বগুড়ায় পৌঁছার পর বগুড়ার পরিবহন মালিক শ্রমিকরা তাৎক্ষণিকভাবে বগুড়া থেকে ঢাকাগামী সকল বাস পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার রাত ১০টা থেকে বগুড়া থেকে ঢাকার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের আহবায়ক মঞ্জুরুল আলম মোহন জানান, কয়েকদিন আগে নওগাঁর পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে বগুড়ার পরিবহন মালিক শ্রমিকদের মধ্যে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। যে কারণে নওগাঁ থেকে সরাসরি ঢাকার বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সোমবার বগুড়ায় রাজশাহী বিভাগীয় পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভায় আলোচনার পর আবারও বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়। তিনি বলেন, ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে ঢাকার মহাখালী থেকে যদি বগুড়া রুটে এসি (শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত) বাস চলাচল করতে না দেওয়া হয় তাহলে বগুড়া থেকে সব বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে। সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে।
বগুড়া জেলা মোটর মালিক গ্রুপের যুগ্ম আহবায়ক ও শাহ্ ফতেহ্ আলী পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, ঢাকার পরিবহন মালিকরা অযথা বগুড়ার বাসগুলোকে চলাচলে বাধা দিচ্ছে। মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ড বগুড়ার মালিক-শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়া না হলে রাজশাহী বিভাগীয় মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ জরুরি বৈঠকে বসে। বৈঠক শেষে রাত ১০টায় ঘোষণা করা হয় বুধবার সকাল ৬টা থেকে উত্তরাঞ্চলের ১১ জেলার সাথে ঢাকার অনির্দিষ্টকালের জন্য কোচ চলাচল বন্ধ থাকবে।
বিডি প্রতিদিন/২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/হিমেল