রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হলেন দ্বিতীয় দফায় করোনায় আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসাকি এলাকায় এভার কেয়ার হাসপাতালে তিনি আসেন। এরপর রাত ১২টা পর্যন্ত সিটি স্ক্যান, আলট্রাসনোগ্রাম, ইকো-ইসিজিসহ কয়েকটি পরীক্ষা করা হয় তার। নানা পরীক্ষার সুবিধার্থে রাতে তাকে ভর্তি করা হয়। তিনি হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের অধীনে সাত তলায় ৭২০৩ রুমে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিভিন্ন পরীক্ষার সময় বেগম জিয়ার সঙ্গে ছিলেন মেডিকেল বোর্ডের তিন সদস্য অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এবং আব্দুল্লাহ আল মামুন। হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকরাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। প্রাইভেটকারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন তার গৃহকর্মী ফাতিমা ও একজন নার্স।
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসক দলের সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, "মেডিকেল বোর্ড ম্যাডামের কয়েকটি পরীক্ষার জন্য বলেছে। সেজন্যই তাকে এভার কেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। ম্যাডাম করোনা পজেটিভ হলেও তার কোনো উপসর্গ নেই। তার অবস্থা স্থিতিশীল এবং তিনি ভালো আছেন।"
এভার কেয়ার হাসপাতালে বিএনপি নেতাদের মধ্যে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা রহমান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগরের উত্তর শাখা যুবদল সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের বলেন, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা ভালো আছে। শারীরিক পরীক্ষার জন্যই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে, গত ১৫ এপ্রিল এভার কেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার সিটি স্ক্যান করা হয়। এরপর তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা জানান, সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট ভালো। গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়া করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর। দেশের প্রায় সকল গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশের বেশ কয়েক ঘণ্টা পর ওইদিন বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে বেগম জিয়ার কোভিড ‘পজিটিভি’র কথা স্বীকার করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ১৬ দিন পর বিএনপি চেয়ারপারসনের করোনার দ্বিতীয় পরীক্ষার রিপোর্টও ‘পজিটিভ’ আসে। গত ২৪ এপ্রিল রাত ১টার দিকে গণমাধ্যমকে বেগম জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল টিমের প্রধান অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী জানান, খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় পরীক্ষার রিপোর্টও ‘পজিটিভ’ এসেছে। তবে তার শারীরিক অবস্থা ভালো। ফুসফুসে কোনও জটিলতা নেই। আগামী ৫-৬ দিন পর খালেদা জিয়ার তৃতীয় দফায় কোভিড টেস্টের ফলাফল ‘নেগেটিভ’ আসবে এবং তিনি করোনামুক্ত হবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন ডা. এফ এম সিদ্দিকী।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসির