ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ থানার কুলা ইউনিয়নের আব্দুল মান্নানের ডান পায়ের পরিবর্তে বাম পা কেটে ফেলার ঘটনায় চিকিৎসক এম আর করিম রেজার বিরুদ্ধে তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ ঘটনায় আগামী ২ মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
রবিবার এ বিষয়ে এক রিটের শুনানি করে বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়ার নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এই আদেশ দেন। করিম রেজা বর্তমানে স্পাইন সার্জারি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ট্রামালোজি অ্যান্ড অর্থপেটিক রিহ্যালিটেশনের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম (মাসুদ)। পরে আদালত থেকে বেরিয়ে তিনি গণমাধ্যমে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ও বিএমডিসির সচিবকে এই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আব্দুল মান্নানের পা কেটে ফেলার ঘটনায় চলতি বছরের আগস্টে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ও ডা. এম আর করিম রেজার সনদ বাতিল চেয়ে রিট করেন। রিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি), বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান, সচিব, ডা. এম আর করিম রেজা, এক্টিভ মেডিকেল কলেজের ডা. মো. নাজিম আজাদকে বিবাদি করা হয়েছে।
আদালত প্রাঙ্গণে ভুক্তভোগী আব্দুল মান্নান বলেন, পা কেটে ফেলার ঘটনায় চিকিৎসক আমাকে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে মামলা করতে মানা করেছিলেন। বলেছিলেন, মামলা করলে চাকরি যাবে তার। পরে এ বিষয়টি বিবেচনা করে আমার পরিবার ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা থেকে বিরত থাকে। চিকিৎসক আমাকে এককালীন ১০ লাখ টাকা এবং প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু ৩ লাখ টাকা পরিশোধ করে বাকি টাকা পরিশোধ করেনি।
পা কাটার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মান্নান বলেন, আমি মালয়েশিয়ায় নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করার সময় পড়ে গিয়ে পা ছুলে যায়। এটি ২০১৯ সালের ঘটনা। পরে আমি বাড়িতে চিকিৎসা নিতে চাই। চিকিৎসক রেজার কাছে যাই। তখন তিনি আমাকে বলেন, তোমার পা প্লাস্টিক সার্জারি করো। দ্রুত সুস্থ্য হয়ে যাবে। আমি চিন্তা করলাম। এরকম চিকিৎসা নিয়ে আমি দ্রুত মালয়েশিয়া যেতে পারবো। ইনকাম করে ক্ষতি পুষে নিতে পারব। পরে অপারেশন করাতে আমার ডান পায়ের বদলে বাম পায়ে টনিক (অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বন্ধ) করাতে বাম পা বেছে নেয়। তিনি বলেন, ১২ ঘণ্টা পরে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলে সমস্যার সমাধান হয়নি। পরে বাম পায়ে পচন দেখা দিলে সেটি আমার পরিবারের অনুমতি না নিয়েই অপারেশন থিয়েটারি গিয়ে পা কেটে ফেলেন। সেই থেকে আমি ভুক্তভোগী। ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট করেছি।
বিডি প্রতিদিন/এএ