৩০ নভেম্বর, ২০২২ ১৯:৫৩

অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহিতা: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহিতা: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

-

অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

বুধবার (৩০ নভেম্বর) বিকালে রাজধানীতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহিদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান এর স্মরণসভায় মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি এ স্মরণসভা আয়োজন করে।  

এসময় মন্ত্রী আরও বলেন, সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন। সংবিধানে বলা হয়েছে দেশের সব কিছু পরিচালিত হবে সাংবিধানিকভাবে, আইনসঙ্গতভাবে। সংবিধানে বলা হয়েছে রাষ্ট্র ব্যবস্থা হবে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র  ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে। সরকার ব্যবস্থা কি হবে সেটাও সংবিধানে বলা হয়েছে। কিভাবে সরকার গঠন হবে তাও বলা হয়েছে। সাংবিধানিক বিধি-ব্যবস্থা সম্পর্কে জনমনে অসন্তোষ সৃষ্টি বা অনাস্থা সৃষ্টির চেষ্টা যদি কেউ করে অথবা সংবিধান পরিপন্থীভাবে যদি কেউ কিছু অর্জন করতে চায় অথবা বিধি-বিধান ভঙ্গ করে বা সেটাতে উস্কানি দেয় বা পরোক্ষভাবে কাজ করে তাহলে সংবিধান অনুযায়ী তার কৃতকর্ম হবে রাষ্ট্রদ্রোহিতা।

শ ম রেজাউল করিম আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে সাংবিধানিক বিধি-বিধান লঙ্ঘন করে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে দেবো, এই করবো, ঐই করবো যারা বলছে তারা সংবিধানের ৭(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রদ্রোহিতার কাজ করছে। সংবিধান বলছে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় দেশ চলবে, সরকার চলবে, আদালত চলবে। আইনের বাইরে কিছু করতে গেলে কৃতকর্ম হবে রাষ্ট্রদ্রোহিতা। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রদ্রোহিতার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। সংবিধানের আলোকে দেশ পরিচালনা করলে, সংবিধানসম্মত কাজ করলে আইনের শাসন পরিপূর্ণতা লাভ করবে।

তিনি আরও বলেন, সংবিধানে বলা হয়েছে কোনও আইন যদি সংবিধানের মূল বিধি-বিধান বা নিয়মের পরিপন্থী তৈরি করা হয়, অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তাহলে ওই আইনের যতটুকু সংবিধানের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ততটুকু বাতিল হবে। সংবিধানের এ বিধান থাকা সত্ত্বেও বিচার বিভাগের অনেকেই সঠিক দায়িত্ব পালন করেননি। তবে বিচারপতি নাজমুল আহাসান বিচারক হিসেবে সে জায়গাটি ভুলে যাননি। তার প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধের প্রাণসঞ্চারী স্লোগান 'জয় বাংলা' জাতীয়ভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ না এটা সম্ভব হতো না। এভাবে ত্রিশ লক্ষ শহিদের স্বপ্নের বাংলাদেশে জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নাজমুল আহসান বিচারক হিসেবে, আইনজীবী হিসেবে লড়াই করেছেন।

মন্ত্রী আরও যোগ করেন, সংবিধান অনুযায়ীই সুপ্রিম কোর্ট পরিচালিত হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ সংসদে পাস হয়েছিল। তার স্বাক্ষরেই সেটি আইন হিসেবে অনুমোদন পায়। তখন এটিকে সংবিধানের একটি অংশে পরিণত করে নাম রাখা হয় পঞ্চম সংশোধনী। সুপ্রিম কোর্ট বহু ক্ষেত্রে সুয়োমোটো রুল ইস্যু করেন। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়-সুপ্রিম কোর্ট সুয়োমোটো রুল ইস্যু করে কেন বলেনি যে সংবিধানের মূলনীতি অনুযায়ী এটা কোন আইন নয়, কারণ খুনিদের বিচার করা যাবে না এটি সংবিধানের বিধি-বিধান পরিপন্থী। ইনডেমনিটি যে সংবিধানের অংশ হতে পারে না দেশের সংবিধান বিশেষজ্ঞরা কেউ কোনদিন কেন বলেনি সে প্রশ্নও থেকে যায়। বিচার বিভাগ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞরা যথাযথ দায়িত্ব পালন করলে জাতিকে ৩৪ বছর অপেক্ষা করতে হতো না বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার পেতে।

বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী কমিটির চেয়ারপার্সন জেড আই খান পান্না, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সাধারণ সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর