চিড়িয়াখানায় গিয়ে কোনো দর্শনার্থী প্রাণীদের উত্ত্যক্ত করলে তাদের জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে। এক্ষেত্রে তার থেকে দুই হাজার টাকা প্রশাসনিক ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে। এ ছাড়া চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণীকে জখম করলে বা অনুমতি ছাড়া খাবার দিলে দুই মাসের জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে।
এমন বিধান রেখে আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ‘চিড়িয়াখানা বিল-২০২৩’ উত্থাপন করা হয়েছে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে বিলটি উত্থাপন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। পরে বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটিকে ৩০ দিনের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সংসদে উত্থাপিত বিলটি পাস হলে দেশের সরকারি সব চিড়িয়াখানা এই আইনের অধীনে পরিচালিত হবে। বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা উপদেষ্টা কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। বিলে বলা হয়েছে, চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণীর বয়সজনিত শারীরিক অক্ষমতা বা সংক্রামক রোগ হতে অন্য কোনো প্রাণীর জীবন রক্ষার্থে বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট প্রাণীর অসহনীয় ক্লেশ নিবারণের জন্য ব্যথাহীন মৃত্যু ঘটানো যাবে। আরো বলা হয়েছে, সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোন চিড়িয়াখানায় বিদেশি প্রজাতির বন্যপ্রাণী কেনা, বিনিময়, উপহার হিসেবে বা অন্য কোনোভাবে সংগ্রহ করা যাবে না। চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণীকে লোকালয়ে ছেড়ে দেওয়া যাবে না।
বিলে বলা হয়েছে, কোনো দর্শনার্থী ফি ছাড়া চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করলে তার কাছ থেকে প্রবেশ ফির সমপরিমাণ মূল্য আদায় করা হবে। এ ছাড়া মাত্রা বিবেচনা করে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে। আর কোনো দর্শনার্থী চিড়িয়াখানায় কোনো প্রাণীকে উত্ত্যক্ত করলে তার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে। দর্শনার্থী চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণীকে কোনোভাবে আঘাত বা জখম করলে বা কিউরেটরের নির্দেশনা অমান্য করে বা অনুমতি ছাড়া খাবার দিলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। এ জন্য দুই মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এসব অপরাধের বিচার করা যাবে।
প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, চিড়িয়াখানায় কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া কোনো অবস্থাতেই একই প্রজাতির একই লিঙ্গের একটি প্রাণী রাখা যাবে না। ভেটেরিনারি কর্মকর্তার নির্দেশনা ছাড়া প্রকৃতিগত কারণে দলবদ্ধভাবে অবস্থানকারী প্রাণীদের মধ্য থেকে কোনো প্রাণীকে আলাদা বা এককভাবে রাখা যাবে না। প্রাণীর প্রকৃতি বিবেচনা করে ন্যূনতম প্রাকৃতিক পরিবেশ বা সুবিধাসম্পন্ন খাঁচায় আবদ্ধ বা মুক্ত রাখতে হবে। প্রাণীর প্রকৃতিগত আচরণ, সংশ্লিষ্ট প্রাণীর লালন-পালনে নিয়োজিত ব্যক্তি ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনা করে প্রাণীর খাঁচার অবকাঠামো তৈরি করতে হবে। বিপন্ন প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য সরকার এক বা একাধিক চিড়িয়াখানা নির্দিষ্ট করতে পারবে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ
