২৪ মে, ২০২৪ ১৯:০৯

ওয়াশ খাতের বাজেটে তিন বৈষম্য, বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ওয়াশ খাতের বাজেটে তিন বৈষম্য, বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাতীয় বাজেটে পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতে বরাদ্দ বাড়লেও তিন ধরনের বৈষম্য লক্ষ্য করা গেছে। এ সব বৈষম্যের মধ্যে রয়েছে গ্রাম-শহরের বৈষম্য, আন্তঃনগর বৈষম্য এবং বিশেষ করে হাওর অঞ্চলে পৌঁছানো কঠিন এমন কিছু এলাকায় কম মনোযোগ দেওয়া। এই তিন ধরনের বৈষম্য দূর করে আসন্ন অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে ওয়াশ খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন। 

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা।

পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি), ওয়াটারএইড, ফানসা, এফএসএম নেটওয়ার্ক, স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অলসহ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা এবং সংস্থাসমূহের প্ল্যাটফর্ম এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। 

সংবাদ সম্মেলনে অর্থনীতিবিদ ও পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ৬ নম্বর লক্ষ্য হলো সবার জন্য নিরাপদ খাবার পানি এবং স্যানিটেশন নিশ্চিত করা। এই লক্ষ্যমাত্রা সঠিক সময়ে অর্জন নিশ্চিত করতে হলে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বৃদ্ধির হার এবং উন্নয়ন বাজেটের সঙ্গে ওয়াশ খাতের বরাদ্দকেও তাল মিলিয়ে চলতে হবে। 

আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে এডিপি বরাদ্দের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক বৈষম্য নিরসন এবং সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততাকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। চর, হাওর, পাহাড়ি অঞ্চলসহ জলবায়ুগত ঝুঁকির আওতাধীন সুবিধাবঞ্চিত এলাকা এবং নগরগুলোর মধ্যকার বরাদ্দ বৈষম্য নিরসন করা প্রয়োজন বলে জানান তিনি। 

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাতে (এমডিজি) ওয়াশ খাতের তুলনায় এসডিজি যুগের ওয়াশ খাতের লক্ষ্যমাত্রা আরও জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং। এখন নিরাপদ খাবার পানি এবং নিরাপদ স্যানিটেশনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ এই লক্ষ্যমাত্রায় যথাক্রমে ৫৯ শতাংশ এবং ৩৯ শতাংশ পূরণ করেছে। এসডিজি ৬ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য মাত্র ৬ বছর বাকি আছে। এ অবস্থায় শুধু ওয়াশ খাতের বরাদ্দ বাড়ালে হবে না বরং আরও গুরুত্ব সহকারে পর্যাপ্ত বরাদ্দ প্রয়োজন। 

বিশেষ করে ওয়াশ খাতের বরাদ্দ এডিপি বৃদ্ধির আকারের সমানুপাতিক বা উচ্চতর হতে হবে। পরিবেশ রক্ষার জন্য, পাবলিক প্লেসসহ সব প্রতিষ্ঠানে নারী, শিশু এবং প্রতিবন্ধী-বান্ধব স্যানিটেশন সেবা নিশ্চিত করতে হবে। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি সংস্থা প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশনের হেড অব প্রোগ্রাম ডেলিভারি অ্যান্ড অপারেশনস তানজীন হোসাইন, ওয়াটার এইড বাংলাদেশের অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড ক্যাম্পেইন লিড ফাইয়াজ উদ্দিন আহমদ প্রমুখ। 

বক্তারা জানান, ওয়াশ খাতের জন্য বরাদ্দে গ্রাম এবং শহরের মধ্যে যে ব্যবধান তা ২০২৩-২৪ অর্থবছরেও ব্যাপকভাবে অব্যাহত ছিল। ওয়াশ খাতের জন্য নেওয়া বরাদ্দ (৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ) এডিপির বর্ধিত (৭ দশমিক ৪ শতাংশ) আকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগোতে পারেনি। ওয়াশ খাতের এমন অনুপাতের চেয়ে কম বৃদ্ধি সরকারের এসডিজি এবং জাতীয় অগ্রাধিকার লক্ষ্যমাত্রার প্রতিশ্রুতি যেমন, শতভাগ সুপেয় খাবার পানি এবং শতভাগ নিরাপদে পরিচালিত স্যানিটেশন ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। 

বক্তারা পূর্ববর্তী অর্থ বছরগুলোর মতো এ বছরেও কিশোরী ও প্রজননক্ষম নারীদের মাসিককালীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরিতে ব্যবহৃত কাঁচামালসহ স্থানীয় পর্যায়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিক্রির ওপর সব ধরনের শুল্ক ও কর শতভাগ মওকুফ করার দাবি জানানো হয়।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর