বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর দ্বারা জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, শনাক্তকরণ ও তারা কোন পরিস্থিতিতে গুম হয়েছিলেন, তা তদন্ত করতে পাঁচ সদস্যের কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
কমিশনকে আগামী ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে সরকারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত কমিশনের অন্য চার সদস্য হলেন- হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত বিচারক মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকারকর্মী সাজ্জাদ হোসেন।
মন্ত্রিপরিষদসচিব মো. মাহবুব হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, “২০১০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সময়ে বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সিআইডি, বিশেষ শাখা [এসবি], গোয়েন্দা শাখা [ডিবি], আনসার ব্যাটালিয়ন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা বাহিনী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই), কোস্ট গার্ডসহ দেশের আইন প্রয়োগ ও বলবৎকারী কোনও সংস্থার কোনও সদস্য কর্তৃক জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান, তাদের শনাক্ত করা ও কোন পরিস্থিতিতে গুম হয়েছিল তা নির্ধারণ করবে এই তদন্ত কমিশন।”
কমিশন ইনকোয়ারি অ্যাক্ট, ১৯৫৬ অনুসারে তদন্ত কমিশন জোরপূর্বক গুম হওয়ার ঘটনাগুলোর বিবরণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করবে এবং এ বিষয়ে সুপারিশ করবে।
জোরপূর্বক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধান পাওয়া গেলে তাদের আত্মীয়-স্বজনকে অবহিত করবে কমিশন। এছাড়া গুমের ঘটনা সম্পর্কে অন্য কোনও সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত তদন্তের তথ্য সংগ্রহ করবে এটি।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কমিশনকে সাচিবিক দায়িত্ব প্রদান করবে এবং কমিশনের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করবে।
কমিশনকে সহায়তার জন্য প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত যেকোনও ব্যক্তিকে দায়িত্ব প্রদান করতে পারবে।
কমিশনের সভাপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের একজন বিচারক এবং কমিশনের সদস্যরা হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারকের মর্যাদা ও অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিভিন্ন সময় সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদলীয় নেতা ও সরকারের সমালোচকদের গুম করার অভিযোগ উঠেছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা। এরপর আলোচিত ‘আয়নাঘর’ থেকে মুক্তি পেয়েছেন বেশ কয়েকজন, যারা তাদের জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গুম করে কয়েক বছর ধরে আটকে রাখার অভিযোগ করেছেন।
এছাড়া আলোচিত বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী ও চৌধুরী আলম এক দশকেরও বেশি সময় আগে গুম হলেও তাদের সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি।
বিডি প্রতিদিন/একেএ