শতভাগ সমর্পিত পেনশন পুনঃস্থাপনের বয়সসীমা ১৫ বছর থেকে কমিয়ে ১০ বছর করাসহ ৩ দফা দাবি জানিয়েছে পেনশন বৈষম্য দূরীকরণ পরিষদ। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সরকারি অবসরপ্রাপ্ত কল্যাণ সমিতির মহাসচিব আবু আলম শহিদ খান, সহ-সভাপতি কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম, শতভাগ পেনশন সমর্পণকারী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. ইনতাজ আলী প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শতভাগ পেনশন সমর্পণকারী গ্রুপের সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ১৫ বছরে পেনশন পুনঃস্থাপনের সুবিধা পেতে হলে একজন পেনশনারকে কমপক্ষে ৭৩ অথবা ৭৫ বছর বেঁচে থাকতে হবে। আমাদের বর্তমান গড় আয়ু ৬৯ দশমিক ৬ বছর। একজন পেনশনার ৭৫ বছর বেঁচে থেকে পেনশন পুনঃস্থাপনের সুবিধা পেলেও তিনি কতদিন তা ভোগ করতে পারবেন, সেটিও বিবেচনায় আনা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন পুনঃস্থাপন হওয়ার একদিন আগেও তিনি যদি মারা যান, তাহলে তার পরিবার পেনশনপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হন। ফলে যৌক্তিক কারণেই পেনশন পুনঃস্থাপনের সময়সীমা ১৫ বছর থেকে কমিয়ে ১০ বছর করা হলে উপকারভোগীর সংখ্যা অনেকটা বাড়বে এবং তারা জীবনের শেষ কিছুদিন আর্থিক নিরাপত্তা ভোগ করার সুযোগ পাবেন।
তিনি আরও বলেন, অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস বিভাগের হিসাব অনুসারে শতভাগ পেনশন সমর্পণ না করে কেউ মাসিক পেনশন ভোগ করলে সমর্পিত পেনশনের আসল টাকা ছয় বছর সাত মাস এবং সুদসহ আসল আট বছর ১১ মাসে সমন্বিত হয়ে যায়।
নজরুল ইসলাম বলেন, সঞ্চয়পত্র ও এফডিআরের মুনাফার হার ক্রমাগত হ্রাস, অস্বাভাবিক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতির কারণে আমরা পেনশনাররা আর্থিকভাবে সংকটাপন্ন। বিশেষত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তারাই পেনশনভোগীদের শতকরা ৮০ ভাগ। তারাই বেশি বিপন্ন এবং তারা দিন দিন দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছেন এবং মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছেন।
চিকিৎসা ভাতা বাড়ানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পেনশনাররা সবাই প্রবীণ। রোগ তাদের নিত্য সহচর। দ্রুত জরা ও বার্ধক্য তাদের গ্রাস করে। প্রবীণ পেনশনার, যাদের বয়স ৬৫ বছরের বেশি, তারা দ্রুতই বিভিন্ন জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী অনিরাময়যোগ্য রোগে আক্রান্ত হন। তাই চিকিৎসাভাতা বাড়ানো খুবই জরুরি।
তাদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, শতভাগ সমর্পিত পেনশন পুনঃস্থাপনের বয়সসীমা ১৫ বছর থেকে পাঁচ বছর কমিয়ে ১০ বছর করতে হবে; নতুন ও পুরাতন স্কেলের পেনশনারদের পেনশন বৈষম্য দূরীকরণে এক পদ এক পেনশন চালু করতে হবে; কর্মরত গণকর্মচারীদের চিকিৎসা ভাতাসহ পেনশনারদের চিকিৎসাভাতা বাড়াতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই