মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চলা মামলায় সাক্ষ্য দেবেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
আগামী সোমবার তারা এই মামলার (স্টার উইটনেস) তারকা সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেবেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামীম আজ বুধবার সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চলা এই মামলায় এখন পর্যন্ত ৪৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আজ বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আগামী সোমবার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন।
এর আগে এ মামলার ৩৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস এইচ তামিম শুনানি করেন। অন্য প্রসিকিউটররাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।
এই মামলায় পলাতক আসামি ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন উপস্থিত ছিলেন। আর গ্রেফতার হয়ে পরে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচার শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
একপর্যায়ে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে আবেদন করলে ট্রাইব্যুনাল তা মঞ্জুর করেন। পরবর্তীতে তিনি রাজসাক্ষী হয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন।
এই মামলাটি ছাড়াও স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়। অন্য মামলাটি হয় রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ