শনিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

কুষ্টিয়ার শিলাইদহে পাঁচতলা কাঠের বাড়ি

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

বাড়ির নাম মন ভোলানো কাঠের বাড়ি। কথার কথা নয়, কাঠ দিয়ে নির্মিত পাঁচতলা বিশিষ্ট এই বাড়ি আসলেই মন ভরিয়ে দেওয়ার মতোই। পর্যটক আকর্ষণে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে নির্মাণ করা হয়েছে এ বাড়ি। এ বাড়িতে স্থান পেয়েছে ইসলামী ও দেশীয় সংস্কৃতির নানা সামগ্রী।  সেখানে প্রতিদিনই ভিড় করছে অসংখ্য মানুষ। শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের কাছে এই বাড়িটি এখন বাড়তি পাওনা হয়ে উঠেছে। শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির অদূরে ১২ শতক জায়গার ওপর এই কাঠের বাড়ি। এ বাড়ির নির্মাতা স্থানীয় বাসিন্দা আবদুর রশীদ জোয়ার্দার। এক সময় শিলাইদহ বাজারে আবদুর রশীদের ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ছিল। আবদুর রশীদ জোয়ার্দার জানান, এক সময় তার মনে হয় শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে বেড়াতে আসা মানুষকে বাড়তি আনন্দ দিতে কিছু করবেন তিনি। সে লক্ষ্যে তিনি নিজস্ব পরিকল্পনায় ২০১৭ সালের গোড়ার দিকে কাঠের বাড়িটি নির্মাণে উদ্যোগী হন। প্রায় দুই বছরের প্রচেষ্টায় নির্মাণ হয় তার স্বপ্নের বাড়ি। তিনি ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেন প্রায় ৩৫ ফুট উচ্চতার ৫তলা এ বাড়িটি।

তিনি বলেন, বাড়ি তৈরিতে ব্যবহার হয়েছে মেহগনি, কেরোসিন, শাল ও তালগাছের কাঠ। বৃষ্টিতে কাঠ দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে ভেবে বাড়ির চার পাশে প্রায় ৭ ফুট উঁচু ইটের দেয়াল রয়েছে। তবে বাড়ির মূল কাঠামোর পুরোটায় নির্মাণ করা হয়েছে কাঠ দিয়ে। রশীদ জানান, ডিপার্টমেন্টাল স্টোরটি বিক্রির পাশাপাশি জমানো টাকায় তিনি বাড়িটি নির্মাণ করেছেন। এতে প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানান তিনি।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বাড়ির নিচতলায় ছোট রেস্টুরেন্ট আর বাকি তলাগুলোতে রয়েছে ইসলামী সংস্কৃতির নানা স্যুভেনির আর বাংলার ইতিহাস, ঐহিত্যবহনকারী নানা নিদর্শন যা দেখে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা। ঢাকা থেকে এ বাড়ি দেখতে আসা দর্শনার্থী আবদুল জলিল বলেন, ‘পাঁচতলা কাঠের বাড়ি এর আগে দেখিনি। বাংলাদেশে এমন বাড়ি আর আছে বলে মনে হয় না।

পরিবেশবান্ধব এই বাড়িটি গড়ে তোলা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন নির্মাণশৈলীতে। রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে বেড়াতে আসা অনেকেই এই কাঠের বাড়ি ঘুরে দেখে যাচ্ছেন। এটিকে বাড়তি পাওনা বলে মনে করছেন তারা। ঝিনাইদহের শৈলকুপা থেকে আসা শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, ‘রবী ঠাকুরের বাড়ি ঘুরতে আসি প্রায় প্রতি বছরই। তবে ঠাকুরবাড়ির পাশেই যে এত সুন্দর একটি স্থাপনা আছে তা জানতাম না। এখানে এসে সত্যিই মুগ্ধ হলাম।’

বাড়ির মালিক আবদুর রশীদ জানান, এ বাড়ির পাশেই তার চার বিঘা জমি আছে। সেখানে তিনি বাচ্চাদের রাইডারসহ আনন্দ-বিনোদনের সামগ্রী দিয়ে সাজাতে চান। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে তা এখনো হয়ে ওঠেনি।

প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ২০ টাকার টিকিটের বিনিময়ে ঘুরে দেখার সুযোগ রয়েছে এই দৃষ্টি নন্দন কাঠের বাড়ি।

সর্বশেষ খবর