সংবাদের খোঁজে শহর-বন্দর, নগর পল্লী চষে বেড়ান সংবাদকর্মীরা আর সেই সংবাদ প্রকাশিত হলে পাঠকদের হাতে পৌঁছে দিতে যে ব্যক্তিটি অক্লান্ত শ্রম দিয়ে যান কেউ কি তার খবর রাখেন! হয়তো কেউ বা কেউই না! কতশত সংবাদ হাতে নিয়ে ঘুরেন তারা। দেশ-বিদেশে এদের ছুটে চলার বিষয়টা খুব একটা আলাদা নয়। দেশে যেমন গুরুত্বপুর্ণ স্থানে পাওয়া যায় সংবাদপত্র, তেমনি বিদেশেও।
দেশে যেমন জনমানুষের হাতে পত্রিকা পৌঁছে দিতে বাড়ি-বাড়ি ছুটতে দেখা যায় হকারকে, তেমনি বিদেশেও। এমনই এক সংগ্রামী সংবাদ বাহকের সঙ্গে দেখা মিললো সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে। নাম জহিরুল ইসলাম। বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর সদরে তার বাড়ি। পত্রিকা বিলি করা তার কাজ। কর্মস্থল সংযুক্ত আরব আমিরাতের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা গালফ নিউজ।
নিজের সংগ্রামী জীবনের বর্ণনা দিতে গিয়ে জহিরুল জানালেন, দীর্ঘ সাত বছর কাটিয়েছেন দুবাই শহরে। পত্রিকা বিলি করেই কেটেছে রাতের পর রাত। ডিউটির সময় শুরু হয় রাত দেড়টায়, শেষ হয় সকাল আটটায়। মাসশেষে বেতন পান পনেরশ' দিরহাম। কমিশনও আসে প্রতিমাসে। ত্রিশদিন পত্রিকা বিক্রির পর প্রতি পত্রিকায় পান সাত দিরহাম কমিশন। এতেই চলে তার সংসার। এ নিয়েই স্বপ্ন দেখে জহির।
জীবনের সাতটি বছর দুবাই শহরে কাটানো জহিরুল বললেন, 'দেড়টায় ডিউটিতে আসি। পত্রিকাবাহী গাড়ি থেকে বিভিন্নভাবে পত্রিকা সাজিয়ে নিই সাইকেলে। এরপর ছুটে চলি। এ দোকান থেকে ও দোকান। এ বাসা থেকে ও বাসা। সাইকেলের চাকা ঘুরতে ঘুরতে একসময় পত্রিকার ব্যাগ খালি হয়ে আসে, কেটে যায় দূর আকাশের কালো মেঘ। লাল সূর্য দেখি, সকাল দেখি। ডিউটি শেষ করে ঘরে ফিরতেই ঘড়িতে বাজে আটটা। তখন অনেক ক্লান্ত লাগে। ঘুমিয়ে পড়ি। আর দেখা হয় না দিনের আলো। আবার রাতে শুরু হয় দিন, এভাবেই চলছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ১২ মার্চ, ২০১৫/ রশিদা