সৌদি আরবের রিয়াদে শুরু হয়েছে ৩দিনের আন্তর্জাতিক ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ও খাদ্য পণ্য মেলা।
মেলায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশসহ ২২টি দেশের ২ শতাধিক প্রতিষ্ঠান।
এই জাতীয় আয়োজনের মাধ্যমে বিদেশি বায়ারদের কাছে দেশীয় পণ্যের প্রচার-প্রসারের পাশাপাশি পাবলিক-প্রাইভেট অংশিদারিত্বে শিল্প স্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এই আয়োজনের মাধ্যমে ১বিলিয়ন ডলারের একটি বাজার সৃষ্টির আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সৌদি খাদ্য ওষুধ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় সিটি ইভেন্টের ব্যবস্থাপনায় তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ওষধ, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ও খাদ্য পণ্যের মেলা সোমবার সকালে রিয়াদের আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে শুরু হয়েছে।
মেলার উদ্বোধন করেন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অথোরিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. হিসাম আল-জাদ। মেলায় ২০টি দেশের ৮০টি ও স্থানীয় ১২০টি প্রতিষ্ঠানসহ মোট ২০০টির বেশী প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে।
সৌদি আরবে বাংলাদেশের ওষুধ ও খাদ্য পন্যের চাহিদা রয়েছে। সৌদি আরবের সাথে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে সৌদি আরবের বাজারে বাংলাদেশের ওষুধ ও খাদ্য পণ্যের পরিচিতি বৃদ্ধি পাবে। আগামী দিনে দেশের ওষুধ ও খাদ্যপণ্য রফতানি বৃদ্ধির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বাস্তবায়ন সম্ভব। সৌদি আরবে রফতানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে দূতাবাসের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের সব ধরণের সাহায্য সহযোগিতা করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ইক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর তত্বাবধানে খাদ্য পণ্যের ২টি এবং ওষুধ শিল্পের ২টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বলছেন মেলায় বাংলাদেশ স্টলে দর্শনার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি এবং আগ্রহ রয়েছে। মেলার মাধ্যমে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সৃষ্টি করা সম্ভব।
বাংলাদেশি বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে ওষুধ রপ্তানীর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ৩দিনের এই আয়োজন সেই চেষ্টাকে একধাপ সামনে এগিয়ে নিবে বলেও আশা প্রকাশ করছেন রপ্তানিকারকরা।
হিমায়িত মাছ রপ্তানী কারকরা বলছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা ১কোটি ২০লাখ প্রবাসীর কাছে বাংলাদেশি মাছে একটি বিশেষ চাহিদা রয়েছে এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইলিশ এবং চিংড়ি। বর্তমানে ইলিশ রপ্তানী বন্ধ রয়েছে জানিয়ে তারা বলেন অন্তৎ প্রবাসীদের স্বাদ পুরণের জন্য হলেও ইলিশ রপ্তানীর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।
রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসের ইকনোমিক মিনিস্টার মোহাম্মদ আবুল হাসান বলেন, ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের সাথে যৌথভাবে শিল্প স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এটি বাসবায়ন হলে ১ বিলিয়ন ডলারের একটি বাজার সৃষ্টি হবে। রপ্তানিকারকরা যাতে তাদের উৎপাদিত পণ্য সৌদি আরবে বাজার ধরতে পারে তার জন্য সরকার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং দূতাবাস সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান সিটি ইভেন্টের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার মোহাম্মদ সামীর বলেন, আমরা খুশি বাংলাদেশকে পেয়ে। এবারই প্রথম বাংলাদেশের অংশগ্রহণ। ছোট পরিসরে হলেও আশাকরি এটাই তাদের শেষ নয়। আগামীতে আরও বড় পরিসরে বাংলাদেশ এই মেলায় অংশ নিবে।
উদ্বোধনী সেশনে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ, মিনিস্টার এস এম আনিসুল হক, ইকোনমিক মিনিস্টার মোঃ আবুল হাসান ও প্রথম সচিব (প্রেস) মোঃ ফখরুল ইসলাম মেলা পরিদর্শন করেন।
৩০ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে মেলা চলবে ২ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার
জন্য উম্মুক্ত থাকবে মেলা প্রাঙ্গন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন