মিল্কি ওয়ের বাইরের এক ডিম্বাকৃতির আবরণে ঢাকা তারার প্রথম বিস্তারিত ছবি ধারণ করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। ইউরোপিয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরির ভেরি লার্জ টেলিস্কোপ ইন্টারফেরোমিটার (VLTI) ব্যবহার করে এই অবিশ্বাস্য ছবি ধারণ করা সম্ভব হয়েছে।
ওএইচ জি৬৪ (WOH G64) নামে পরিচিত এই তারা পৃথিবী থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এবং লার্জ ম্যাগেলানিক ক্লাউড নামের একটি ছোট ছায়াপথে অবস্থান করছে। এটি একটি লাল সুপারজায়ান্ট তারকা যার ব্যাস সূর্যের চেয়ে প্রায় ২ হাজার গুণ বড়।
চিলির আন্দ্রেস বেলো ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. কিয়েইচি ওনাকা বলেন, আমরা তারাটিকে ঘিরে থাকা ডিম্বাকৃতির একটি আবরণ আবিষ্কার করেছি। এটি সম্ভবত তারার সুপারনোভা বিস্ফোরণের আগে থেকে ঘটে যাওয়া নাটকীয় উপাদান নিঃসরণের সঙ্গে সম্পর্কিত।
ছবিতে দেখা যায়, তারাটি একটি চূড়ান্ত রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং গত কয়েক দশকে এটি তার বাইরের স্তরগুলো বিস্ফোরিত করেছে। ফলে এটি গ্যাস ও ধুলোর ডিম্বাকৃতির মেঘে আবৃত হয়ে গেছে। এই ডিম্বাকৃতি তারার ঘূর্ণন বা কোনো অজানা সঙ্গী তারার প্রভাবের কারণে সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশাল এই তারা এখন তার জীবনের শেষ পর্যায়ে রয়েছে এবং খুব শিগগিরই এটি সুপারনোভা বিস্ফোরণে রূপান্তরিত হতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। কিল ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. জ্যাকো ভ্যান লুন বলেন, সুপারনোভা বিস্ফোরণ এমন এক শক্তি নির্গত করে, যা সূর্যের ১০ বিলিয়ন বছরের জীবনকালের সমান উজ্জ্বল।
তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন, ‘তাৎক্ষণিক’ মানে জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরিসরে কয়েক হাজার বছর সময় হতে পারে। যদিও তারাটি এর শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে, এমন পরিবর্তন সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা এক বিরল সুযোগ।
এই গবেষণার ফলাফল জার্নাল অব অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিকস-এ প্রকাশিত হয়েছে। এটি তারার জীবনচক্রের এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উন্মোচনে সহায়তা করবে।