ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)-এর গবেষকরা এমন এক ধরনের মৌমাছি-সদৃশ ক্ষুদ্র রোবট তৈরি করছেন। যা একদিন মঙ্গল গ্রহে গাছের পরাগায়ণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে দাবি করছেন তারা।
কাগজের ক্লিপের চেয়েও হালকা এই রোবট প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৪০০ বার পাখা ঝাপটাতে সক্ষম এবং সর্বোচ্চ দুই মিটার গতিতে উড়তে পারে। এটি বাতাসে স্থির হয়ে ভাসতে, উল্টোদিকে ঘুরতে ও জটিল কৌশল প্রদর্শন করতে পারে।
প্রকল্পে যুক্ত পিএইচডি শিক্ষার্থী ই হসুয়ান (নেমো) হসিয়াও বলেন, আমরা কেবল মৌমাছির অসাধারণ চালচলনগুলো অনুকরণ করার চেষ্টা করছি। তাঁর মতে, ভবিষ্যতে মঙ্গল গ্রহে খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে রোবট মৌমাছি প্রাকৃতিক পোকামাকড়ের বিকল্প হতে পারে।
এমআইটির সহকারী অধ্যাপক ও প্রকল্পের প্রধান গবেষক কেভিন চেন জানান, তাঁদের লক্ষ্য মৌমাছিদের প্রতিস্থাপন করা নয় বরং এমন পরিবেশে রোবটকে কাজে লাগানো যেখানে প্রাকৃতিক মৌমাছি বেঁচে থাকতে পারে না—যেমন কৃত্রিম আলোযুক্ত উল্লম্ব কৃষিখামার।
প্রকল্পের আরেক অংশে গবেষকরা ঘাসফড়িং-সদৃশ ক্ষুদ্র রোবট তৈরি করেছেন, যা প্রায় আট ইঞ্চি উঁচুতে লাফ দিতে পারে। এটি ঘাস, বরফ কিংবা পাতার মতো বিভিন্ন ভূখণ্ডেও চলাচল করতে সক্ষম।
গবেষক দলের মতে, এই ক্ষুদ্র রোবটগুলো ভবিষ্যতে অনুসন্ধান, উদ্ধার তৎপরতা কিংবা পাইপলাইন ও টারবাইন ইঞ্জিনের ভেতর পরিদর্শনের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে এখনও এগুলো তারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পাচ্ছে, কারণ এত ছোট রোবটে ব্যাটারি বসানো অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং।
চেনের ধারণা, সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ক্ষুদ্র রোবট মাঠে ব্যবহারযোগ্য হতে আরও ২০ থেকে ৩০ বছর সময় লাগতে পারে। তিনি বলেন, কীটপতঙ্গ লক্ষ লক্ষ বছরের বিবর্তনে এমন দক্ষতা অর্জন করেছে, যেখান থেকে আমাদের শেখার অনেক কিছু আছে।
সূত্র: সিএনএন
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল