ইলন মাস্কের মালিকানাধীন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্স তাদের সর্ববৃহৎ রকেট স্টারশিপ-এর একাদশ পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন সম্পন্ন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের স্টারবেস ঘাঁটি থেকে স্থানীয় সময় সোমবার রকেটটি উৎক্ষেপণ করা হয়।
রকেটটি আকাশে উড্ডয়নের পর পরিকল্পনা অনুযায়ী এর বুস্টার (প্রধান চালক অংশ) আলাদা হয়ে যায়। পরে এটা নিয়ন্ত্রিতভাবে মেক্সিকো উপসাগরে পতিত হয়। অন্যদিকে মহাকাশযানটি মহাকাশের প্রান্ত স্পর্শ করে পরে ভারত মহাসাগরে নেমে আসে। পুরো উড্ডয়নটি ছিল সফল, যদিও রকেটের কোনো অংশ উদ্ধার করা হয়নি।
স্পেসএক্সের কর্মকর্তা ড্যান হুয়েট বলেন, ‘স্টারশিপ, পৃথিবীতে স্বাগত। আজকের দিনটি সত্যিই দারুণ।’ এটি ছিল পূর্ণাঙ্গ স্টারশিপের ১১তম পরীক্ষামূলক ফ্লাইট।
কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক এই রকেট দিয়েই ভবিষ্যতে মানুষকে মঙ্গলে পাঠানোর পরিকল্পনা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসাও কাছাকাছি লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। সংস্থাটি ২০৩০ সালের মধ্যে নভোচারীদের চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করানোর পরিকল্পনা করছে। সেখানে স্টারশিপ ব্যবহৃত হবে পুনঃব্যবহারযোগ্য যান হিসেবে—যা চাঁদের কক্ষপথ থেকে পৃষ্ঠে নামিয়ে আবার ফিরে আসবে।
ইলন মাস্ক জানান, এবারই প্রথম তিনি নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ভেতর নয়, বাইরে থেকে রকেট উৎক্ষেপণ প্রত্যক্ষ করেছেন। ‘এটা অনেক বেশি প্রাণবন্ত অভিজ্ঞতা’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গত আগস্টে সফল এক পরীক্ষার পর এবার ছিল দ্বিতীয় বড় মাইলফলক। এবার মহাকাশযানের নিয়ন্ত্রণ ও পুনঃপ্রবেশ কৌশল আরও উন্নত করা হয়, যা ভবিষ্যতে রকেটটি আবার উৎক্ষেপণ ঘাঁটিতে নামানোর অনুশীলন হিসেবে দেখা হচ্ছে। রকেটটি এবারও আটটি নকল স্যাটেলাইট বহন করে উড়েছিল। এগুলো স্টারলিংক প্রকল্পের কাঠামো অনুকরণে তৈরি করা হয়েছে। পুরো ফ্লাইটটি চলে প্রায় এক ঘণ্টা।
নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক শন ডাফি এক্স-এ লেখেন, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে আমেরিকানদের অবতরণের পথে এটি আরেকটি বড় পদক্ষেপ।
বর্তমানে স্পেসএক্স ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল উৎক্ষেপণ ঘাঁটি আধুনিকায়ন করছে, যাতে স্টারশিপ ছাড়াও তাদের ছোট রকেট ফ্যালকন -এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে নভোচারী ও সরঞ্জাম পাঠানোর কাজ চালিয়ে যেতে পারে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল