মরুভূমির মতো শুষ্ক পরিবেশে খাবার পানির সংকট একটি বড় সমস্যা। তবে এবার সেই সমস্যার সমাধানে নতুন এক দিগন্ত উন্মোচন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি)-এর গবেষকরা। তাঁরা এমন একটি যন্ত্র তৈরি করেছেন যা মরুভূমির শুষ্ক বাতাস থেকেও সুপেয় পানি সংগ্রহ করতে সক্ষম।
এমআইটির গবেষকদের তৈরি এই যন্ত্রটি দেখতে অনেকটা ছোট জানালার মতো। এর মূল অংশ হলো 'হাইড্রোজেল' নামের একটি শোষক পদার্থ, যা লবণের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করা হয়েছে। এই হাইড্রোজেল স্পঞ্জের মতো কাজ করে, যা সরাসরি বাতাস থেকে জলীয় বাষ্প শোষণ করতে পারে। এটি যখন বাষ্প শোষণ করে তখন ফুলে ওঠে এবং পরে আবার বাষ্প ছেড়ে দিয়ে আকারে ছোট হয়ে আসে।
হাইড্রোজেল যখন বাষ্প ছেড়ে দেয়, তখন সেই বাষ্প বিশুদ্ধ পানির কণার আকারে যন্ত্রের ভেতরের কাঁচের দেয়ালে জমা হয়। এরপর একটি নল দিয়ে গড়িয়ে এই পানি একটি পাত্রে জমা করা হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে কোনো বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না, শুধু সূর্যের তাপই যথেষ্ট।
এমআইটির অধ্যাপক সুয়ানহে ঝাও জানিয়েছেন, বর্তমানে এই যন্ত্রটি দিনে একটি কাপের প্রায় তিন ভাগের দুই ভাগ পরিমাণ পানি সংগ্রহ করতে পারে। যদিও এর পরিমাণ খুব বেশি নয় তবে এটি চরম শুষ্ক মরুভূমিতে মানুষের জন্য ন্যূনতম পানীয় জল সরবরাহের একটি বাস্তবসম্মত সমাধান হতে পারে।
অধ্যাপক ঝাও আরও বলেন, বাতাস থেকে পানি সংগ্রহের পুরোনো পদ্ধতিগুলোর জন্য বাতাসে যথেষ্ট পরিমাণে জলীয় বাষ্প থাকা জরুরি। কিন্তু তাদের তৈরি এই নতুন যন্ত্রটি অত্যন্ত শুষ্ক পরিবেশেও কার্যকর। এই পদ্ধতির মূল সুবিধা হলো এর শোষক পদার্থ হাইড্রোজেল, যা দামে সস্তা এবং নিজের আকারের তুলনায় ১০ গুণ পর্যন্ত ফুলে উঠতে পারে। এটি খুব কম শক্তি খরচ করে কাজ করতে পারে।
একই ধরনের গবেষণা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে চিলির আতাকামা মরুভূমিতেও হয়েছে, যা মেরু অঞ্চলের বাইরে সবচেয়ে শুষ্ক স্থান হিসেবে পরিচিত। সেখানেও বিজ্ঞানীরা হাইড্রোজেল ব্যবহার করে সফলভাবে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করতে পেরেছেন।
সূত্র: সিএনএন
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল