চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াডে নেই, টিম ম্যানেজমেন্ট আগেই জানিয়েছিলেন লিটন দাসকে। স্কোয়াডে বাদ পড়ার বিষয়টিকে নিজেকে প্রমাণের চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেন। সেই চ্যালেঞ্জে জিতেছেন লিটন। প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু ড্যাসিং ক্রিকেটার লিটনের বাদ পড়ার কারণ হিসেবে ছন্দহীনতার কথা জানান। সিলেটে স্কোয়াড ঘোষণার রাতে ঢাকা ক্যাপিটালসের হয়ে দুর্বার রাজশাহীর বিরুদ্ধে ৫৫ বলে ১০ চার ও ৯ ছক্কায় ২২৭.২৭ স্ট্রাইকরেটে ৭৩ রানের নান্দনিক এক ইনিংস খেলেন। টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরির ইনিংস খেলে নিজেকে প্রমাণের চ্যালেঞ্জে যেমন জিতেছেন, তেমনি পাহাড়সমান চাপে ফেলে দিয়েছেন নির্বাচক প্যানেলকে। রবিবার চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করেছে। অবশ্য ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে স্কোয়াডে পরিবর্তন আনতে পারবে জরুরি প্রয়োজনে। সেক্ষেত্রে লিটনের দলে ফেরার দুয়ার উন্মুক্ত থাকছে বলাই যায়! বাদ পড়ে দলে ফেরার বহু উদাহরণ রয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে। লিটন ফিরতে পারেন যদি বিপিএলে পরের ৫ ম্যাচে রানের ফুলঝুরি ছোটান। লিটন বাদ পড়লেও স্কোয়াডকে ব্যালান্সড বলেছেন টাইগার সাবেক অধিনায়ক ও রংপুর রাইডার্সের ব্যাটিং কোচ মোহাম্মদ আশরাফুল, ‘ছন্দে থাকা দেশসেরা ক্রিকেটারদের নিয়েই দল গড়া হয়েছে। আমি মনে করি একটি ব্যালান্সড দল হয়েছে।’
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ খেলবে ‘এ’ গ্রুপে। গ্রুপের বাকি তিন দল ভারত, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড। তিন দলই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতেছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি ৮ জাতির চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ২০ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে, প্রতিপক্ষ ভারত। ২৪ ফেব্রুয়ারি নিউজিল্যান্ড এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ দুটি রাওয়ালপিন্ডিতে। তিন চ্যাম্পিয়নের বিরুদ্ধে নাজমুল হোসেন শান্তদের টার্গেট নিয়ে প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘আশা নিয়ে যেতে হবে। প্রতি ম্যাচে লড়তে হবে। টার্গেট অবশ্যই পরের রাউন্ড। সেই সামর্থ্য আমাদের দলের আছে।’ তিনটি দলকেই ওয়ানডেতে হারানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে বাংলাদেশের। লিটন বাদ পড়ায় ওপেনিংয়ে খেলবেন তানজিদ হাসান তামিম, সৌম্য সরকার ও পারভেজ হোসেন ইমন। ইনজুরির জন্য বিপিএল খেলছেন না সৌম্য। প্রথমবারের মতো ওয়ানডে স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছেন পারভেজ হোসেন ইমন। ওপেনারদের মূল লড়াইটা করতে হবে প্রতিপক্ষ বোলারদের বিরুদ্ধে। অধিনায়ক নাজমুল শান্ত ছাড়াও মিডল অর্ডারে ভরসা দুই বর্ষীয়ান মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এবং তাওহিদ হৃদয়, মেহেদি হাসান মিরাজ, জাকের আলি অনিক ও রিশাদ হোসেন। মিরাজ স্পিন অলরাউন্ডার হিসেবে দলের অন্যতম সেরা নিওক্লিয়াস। দেশসেরা ক্রিকেটার সাকিবের অভাব পূরণে ব্যাটিংয়ে মিরাজ ও বোলিংয়ে নাসুম আহমেদের ওপর চাপ থাকবে। স্পিন বিভাগে বৈচিত্র্য রয়েছে। অফ স্পিনার মিরাজ, বাঁ হাতি স্পিনার নাসুম ও লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন। ছন্দে থাকার পরও পেস অ্যাটাকে সুযোগ পাননি হাসান মাহমুদ। অবশ্য চার পেসার- আহমেদ, নাহিদ রানা, মুস্তাফিজুর রহমান ও তানজিম হাসান সাকিব নিজেদের প্রমাণ করেছেন। হাসান মাহমুদের জায়গায় সুযোগ পেয়েছেন ‘স্পিড স্টার’ নাহিদ রানা।
দলের পেস বিভাগ নিয়ে সাবেক অধিনায়ক আশরাফুল বলেন, পেস অ্যাটাক কিন্তু খুব ভালো হয়েছে। বৈচিত্র্য রয়েছে। তাসকিন দারুণ ছন্দে। নাহিদ জোরে বল করেন। তানজিমের স্লোয়ারটা খুব ভালো। মুস্তাফিজ অভিজ্ঞ বোলার। আমি মনে করি, বাংলাদেশ ভালো করবে।’
চলতি বছর বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দিয়ে। নাজমুল শান্তের নেতৃত্বে টাইগাররা কতটা ভালো পারফরম্যান্স করবে, তার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে ক্রিকেটপ্রেমীদের।