কানাঘুষা চলছিল আগে থেকেই। লিটন দাসই হতে যাচ্ছেন সংক্ষিপ্ত সংস্করণে বাংলাদেশের অধিনায়ক। গুঞ্জনটাই সত্যি হলো। লিটন দাসকে অধিনায়ক করে আসন্ন আরব আমিরাত (দুটি টি-২০) এবং পাকিস্তান (পাঁচটি টি-২০) সিরিজের জন্য ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ২০২৬ সালের টি-২০ বিশ্বকাপ পর্যন্ত অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে লিটনকে। নাজমুল হোসেন শান্ত গত জানুয়ারিতেই টি-২০ অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশ জাতীয় দলে অধিনায়ক হিসেবে লিটন দাসের অভিষেক হয় ২০২১ সালের ১ এপ্রিল। অকল্যান্ডে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ম্যাচে নিয়মিত অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ খেলতে পারেননি। লিটন দাস অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচে শূন্য রানে আউট হন। সেই ম্যাচে নিউজিল্যান্ড জয় পায় ৬৫ রানে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে নিয়মিত অধিনায়ক তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে অধিনায়কের দায়িত্ব পান লিটন। সেই সিরিজে ২-১ ব্যবধানে ভারতকে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশ। ২০২৩ সালের জুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সাকিবের অনুপস্থিতিতে টেস্ট দলেরও অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন লিটন। সেই ম্যাচে সর্বোচ্চ রানে জয়ের রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ (৫৪৬ রানে)। অতীতের সফলতা তাকে আরও সামনের দিকেই এগিয়ে দিয়েছে। গত বছর ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদেরই মাটিতে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজে পরাজিত করে বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্ত ইনজুরিতে থাকায় সেই সিরিজে অধিনায়ক ছিলেন লিটন। বেশ কিছু সফলতা নিয়েই পাকাপোক্তভাবে অধিনায়ক হলেন লিটন দাস।
দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করেই লিটনকে অধিনায়ক করেছে বিসিবি। ২০২৬ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করবে। বিশ্বকাপকে সামনে রেখেই চলবে প্রস্তুতি। লিটনকে নেতৃত্ব দেওয়া প্রসঙ্গে ক্রিকেট অপরারেশন্সের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, ‘এবার দীর্ঘমেয়াদি চিন্তাভাবনা করেই আমরা অধিনায়কত্ব ঠিক করেছি। আগামী টি-২০ বিশ্বকাপকে সামনে রেখেই লিটন কুমার দাসকে আমাদের জাতীয় দলের টি-২০ অধিনায়ক করা হয়েছে।’ আসন্ন দুই সিরিজে লিটন দাসের ডেপুটি হিসেবে থাকবেন শেখ মেহেদি। এ প্রসঙ্গে নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, ‘আরব আমিরাত এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭ ম্যাচের জন্য শেখ মেহেদিকে সহ-অধিনায়ক করা হয়েছে।’
গত বছর ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজের এবারই প্রথম এ সংস্করণে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের দলে ছিলেন আফিফ হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ ও রিপন মণ্ডল। এবার তাদের জায়গা নিয়েছেন নাজমুল হোসেন, তাওহিদ হৃদয়, তানভীর ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম। আগামী ১৭ ও ১৯ মে আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুটি টি-২০ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। দুটি ম্যাচই হবে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। ২৫ মে থেকে ৩ জুন পর্যন্ত পাকিস্তান সফরের ম্যাচগুলো হবে ফয়সালাবাদ ও লাহোরে।
বাংলাদেশ দল : লিটন কুমার দাস (অধিনায়ক), শেখ মেহেদি হাসান (সহ-অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, শামীম পাটোয়ারী, জাকের আলী অনিক, রিশাদ হোসেন, তানভীরুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, তানজিম হাসান সাকিব, নাহিদ রানা ও শরিফুল ইসলাম।