পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, টি-২০ ক্রিকেটে দুর্দান্ত সময় পার করছে বাংলাদেশ। লিটন কুমার দাস এবং জাকের আলি অনীকের নেতৃত্বে চলতি বছর দাপুটে ক্রিকেট খেলছে টাইগাররা। টি-২০ এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেননি লিটনরা, কিন্তু টানা সিরিজ জিতেছেন। ২০২৫ সালে ৬ সিরিজে অংশ নিয়ে টানা ৪টি সিরিজ জিতেছে টাইগাররা। ২৪ ম্যাচে জয় ১৬টি। শতাংশের হিসেবে যা ৭৫ শতাংশ। সিরিজগুলোতে প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াইগুলো একপেশে হচ্ছে। সেজন্যই হয়তো টাইগার অধিনায়ক লিটন প্রতিপক্ষের কাছ থেকে আরও বেশি চ্যালেঞ্জ আশা করছেন, ‘আমি চাই আসন্ন সিরিজ দুটিতে আমাদের খেলোয়াড়রা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। ব্যাটিং, বোলিং যে কোনো বিভাগেই সেটা হতে পারে। ৬টি ম্যাচ আছে আমাদের। আমি চাই, বোলাররা যখন বল করবে তখন যেন চাপ থাকে। সামনে যেহেতু বিশ্বকাপ, এই চাপগুলো আমাদের সাহায্য করবে।’ আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারতের মাটিতে টি-২০ বিশ্বকাপ। তার আগে প্রস্তুতিটা ভালো চাইছেন টাইগার অধিনায়ক। চট্টগ্রাম বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩ ম্যাচের টি-২০ সিরিজ শুরু আজ। এরপরই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে ৩টি টি-২০ ম্যাচ।
টি-২০ এশিয়া কাপের সুপার ফোর চলাকালীন পাজরে ব্যথা পেয়েছিলেন লিটন। এরপর টুর্নামেন্টের শেষ দুটি ম্যাচ ও শারজাহতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের টি-২০ সিরিজ খেলেননি। তার পরিবর্তে জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন জাকের আলি। সুস্থ না হওয়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলেননি। এখন পুরোপুরি সুস্থ। চট্টগ্রামে খেলবেন সিরিজ। ফের নেতৃত্ব¡ বুঝে নিয়েছেন। লিটন এখন পর্যন্ত ২৩ টি-২০ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে জিতেছেন ১৩টি এবং হার ২টি। ২০ ওভারে ফরম্যাটে সামনে থেকে দল পরিচালনা করছেন লিটন। জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা সিরিজের পর টেস্ট নেতৃত্ব ছেড়ে দিয়েছেন নাজুমল হোসেন শান্ত। তার সরে দাঁড়ানোয় নতুন টেস্ট অধিনায়ক খুঁজছে বিসিবি। নতুন টেস্ট অধিনায়কের তালিকায় রয়েছেন লিটন। এর আগেও তিনি টেস্ট নেতৃত্ব দিয়েছেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক টেস্ট নেতৃত্বে ৫৪৬ রানের রেকর্ড ব্যবধানে জয় উপহার দিয়েছিলেন দেশকে। লিটন এবারও প্রস্তুত টেস্ট নেতৃত্ব দিতে, ‘খেলোয়াড় হিসেবে আপনি যখন খেলবেন, টেস্ট ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব (আপনার কাছে) অনেক বড় পাওয়া। আমার মনে হয় না কেউ ‘না’ করবে। কিন্তু তাদের (বিসিবি) পক্ষ থেকে এখনো কিছু বলা হয়নি।’ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে নভেম্বরের শুরুতে ২টি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ।
অনুশীলন শুরুর আগে গতকাল দুই দলের অধিনায়ক লিটন ও শাই হোপ ট্রফি উন্মোচন করেন ঐতিহাসিক সেন্ট্রাল রেলওয়ে স্টেশনে। আজকের ম্যাচটি ঐতিহাসিক। এই প্রথম চট্টগ্রামে টি-২০ ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুই দল এর আগে ১৯টি ম্যাচ খেলেছে পরস্পরের বিপক্ষে। বাংলাদেশের ৮ জয়ের বিপরীতে ৯ জয় ক্যারিবীয়দের। টাইগাররা ১৯ ম্যাচের মাত্র ৬টি খেলেছে ঘরের মাঠে। যার ৫টিই মিরপুরে এবং একটি সিলেটে।
২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। মিরপুরে ৩ ম্যাচের সিরিজের একটি ম্যাচ টাই হয়েছে। ফল নির্ধারিত হয়েছে সুপার ওভারে। সব ফোকাস টেনে নিয়েছিল কালো মাটির উইকেট। মিরপুরের উইকেটে বল লাটিমের মতো ঘুরেছে। এক ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৫ স্পিনার পুরো ৫০ ওভার বোলিং করে বিশ্ব রেকর্ড গড়েন। চট্টগ্রামের উইকেট অবশ্য কালো মাটির নয়, বাদামি রঙের। বরাবরই মিরপুরের উইকেটের চেয়ে একটু বেশি বাউন্স থাকে। একটু মড়া ঘাস থাকে। এবার খেলা হবে পুরোপুরি সন্ধ্যায় ফ্লাড লাইটে। শিশির পড়বে। তাই বল গ্রিপ করতে কষ্ট হবে বোলারদের। সেজন্যই দুই দলের পারফরম্যান্সে উইকেট ব্যবধান গড়ে দিতে পারে। অবশ্য টাইগার অধিনায়ক লিটন উইকেট নিয়ে খুব বেশি কিছু বলতে রাজি হননি, ‘মিরপুরের উইকেটের বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। চট্টগ্রামে আশা করি ভালো উইকেটে খেলা হবে। ভালো উইকেটে আমরা রান করার চেষ্টা করব। উইকেট কঠিন হলে লড়াই করার চেষ্টা করব।’
৫০ ওভারের ম্যাচ শেষে এখন ২০ ওভারের ফরম্যাট। প্রতিপক্ষ একই, ওয়েস্টইন্ডিজ। ফরম্যাট বদলেছে। ক্যারিবীয়রা দুবারের টি-২০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। গত বছরের ডিসেম্বরে দলটিকে তাদের মাটিতে হোয়াইটওয়াশ করেছিল। এবারও ফেবারিট। তার পরও শঙ্কা থেকে যায়। সেটা ভালো করে জানেন টাইগার অধিনায়ক, ‘সংস্করণভেদে ক্রিকেটারের মানসিকতা বলেন বা আগ্রাসনটা একটু পরিবর্তন হয়। আমার মনে হয়, আমাদের খেলোয়াড়রা এ সংস্করণটা ভালো জানে। অনেকদিন ধরে খেলে সফলও হয়েছে।’