ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতির কারণে অভ্যন্তরীণ চাপের মুখে পড়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সরকারে নিজ জোটের ভেতর থেকেই এখন তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ক্ষমতা ধরে রাখতে আগাম নির্বাচনের দিকেই নজর দিচ্ছেন নেতানিয়াহু।
বর্তমানে ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন কট্টরপন্থী জোটের হাতে রয়েছে মাত্র ৬০টি আসন। যা মোট আসনের ঠিক অর্ধেক। ফলে অনাস্থা প্রস্তাব এলে সরকারের টিকে থাকা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। ২০ অক্টোবর থেকে নেসেটের নতুন অধিবেশন শুরুর পর থেকেই এই অনিশ্চয়তা আরও বেড়েছে।
গত ১০ অক্টোবর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপে গাজায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় ইসরায়েল। কিন্তু জোটের কয়েকটি দল এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলছে, গাজায় অভিযান অব্যাহত রাখা উচিত। তারা আপাতত জোটে থাকলেও নানা শর্ত আরোপ করে সরকারের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে।
স্বাধীন বিশ্লেষক মাইকেল হরোউইৎজ বলেন, যুদ্ধবিরতির কারণে নেতানিয়াহুর জোট দুর্বল হয়ে পড়েছে। এখন তার মূল লক্ষ্য হলো কীভাবে আগাম নির্বাচন ডেকে রাজনৈতিক অবস্থান শক্ত করা যায়।
১৮ অক্টোবর এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, তিনি আগামী নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন এবং জয়ের আশা রাখছেন। ইসরায়েলের সংবিধান অনুযায়ী, পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন ২০২৬ সালের শেষ ভাগে হওয়ার কথা থাকলেও রাজনৈতিক চাপ বাড়লে আগাম নির্বাচনের পথ খুলে যেতে পারে।
এরই মধ্যে জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামান বেন-গভির জোট ছাড়ার হুমকি দিয়েছেন। শাস পার্টির ১১ জন আইনপ্রণেতা নিজেদের সরকারের কার্যক্রম থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছেন। এর আগে ইউনাইটেড তোরাহ জুদাইসম জোট থেকেও সরে গেছে।
নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক অমিত সেগাল জানিয়েছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে ২০২৬ সালের জুনেই আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। তবে ততদিন সরকার টিকিয়ে রাখতে জোটসঙ্গীদের সঙ্গে নানা রাজনৈতিক সমঝোতায় যেতে হতে পারে তাঁকে।
দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক মামলার মুখোমুখি থাকলেও আগামী নভেম্বরে লিকুদ পার্টি আবারও তাঁকেই দলের প্রধান হিসেবে মনোনয়ন দিতে যাচ্ছে। বিকল্প নেতৃত্বের অভাব এবং তুলনামূলক জনপ্রিয়তার কারণে নেতানিয়াহুই এখনো দলের প্রথম পছন্দ।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল