সোরিয়াসিস নিয়ন্ত্রণ করুন, স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে থাকুন। সোরিয়াসিস/ঢ়ংড়ৎরধংরং ত্বকের একটি প্রদাহজনিত রোগ। জনসংখ্যার ২-৪% এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যে কোনো বয়সীরা এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন তবে তিরিশোধর্্বরা বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এটি কোনো সংক্রামক রোগ নয়, কাজেই সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় না।
কীভাবে হয় : সাধারণত আমাদের ত্বকের কোষসমূহ একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময় পর পর ঝরে যায় এবং নতুন কোষ তৈরি হয়। প্রক্রিয়াটি খুবই সমন্বিতভাবে হয়ে থাকে বিধায় স্বাভাবিকভাবে বোঝা যায় না। সোরিয়াসিস রোগে ত্বকের ইপিডারমিস এ অবস্থিত কোষসমূহ খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং ত্বকের উপরে এক ধরনের প্লাক/ঢ়ষধয়ঁব তৈরি করে। লক্ষণ ও মাত্রা অনুযায়ী এ রোগ কয়েক ধরনের হতে পারে।
দেখতে কেমন এবং লক্ষণ কি : আক্রান্ত অংশে রুপালি সাদা অাঁশ দ্বারা আবৃত,উজ্জ্বল লালচে বর্ণের প্লাক/খত দেখা যায়। সাধারণত মৃদু চুলকানি অনুভূত হতে পারে। এ রোগের কয়েকটি ধরন রয়েছে। ধরন অনুযায়ী লক্ষণের তারতম্য হতে পারে।
কোন অংশ আক্রান্ত হয় : সাধারণত কনুই, হাঁটু,মাথা, হাত ও পা এর নখ হয়। তবে ধরন ভেদে বিভিন্ন অংশ এমনকি পুরো শরীর আক্রান্ত হতে পারে।
কি কারণে হয় : আক্রান্তদের এক তৃতীয়াংশের মধ্যে বংশগত কারণ পাওয়া যায়। এছাড়া বাকিদের নির্দিষ্ট কোনো কারণ নির্ণয় করা দুরূহ। তবে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে দ্রুত ছড়াতে পারে যেমন কোনো ধরনের সংক্রামণ, ত্বকে আঘাত জনিত কারণে, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, আবহাওয়াজনিত কারণ যেমন শীতে বেড়ে যেতে পারে আবার কিছু ওষুধ সেবনের কারণেও দ্রুত ছড়াতে পারে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সঙ্গে এ রোগের সম্পর্ক রয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।
জটিলতা : আক্রান্তদের মধ্যে ৩০-৩৫% আরথ্রাইটিস বা হাড়-জোড়ার প্রদাহে ভুগে থাকেন। শরীরের বেশির ভাগ অংশ এ রোগের কারণে প্রদাহ ছড়িয়ে পড়লে অনেক সময় মৃতঝুঁকিও দেখা দিতে পারে। আক্রান্তরা অনেক সময় সামাজিকভাবে নিজেদের গুটিয়ে ফেলতে চান এবং বিষণ্নতায় ভোগেন।
চিকিৎসা : রোগের ধরন অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে, অল্প অংশ আক্রান্ত হলে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ক্রিম, লোশন জেল ইত্যাদি রূপে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়ে থাকে।
অনেক বেশি অংশে ছড়িয়ে পড়লে মুখে খাবার ওষুধ, ষঃৎধারড়ষবঃ ৎধু,চটঠঅ থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
মনে রাখবেন ত্বকের অন্য রোগে সোরিয়াসিস এর মত প্লাক দেখা দিতে পারে। এ রোগ কখনই পুরোপুরি ভালো হয় না বা জীবনহানির কারণও হয় না। তবে নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কাজেই নিয়মিত চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করুন।
সিনিয়র কনসালটেন্ট : চর্ম, এলার্জি ও কসমেটিকজনিত রোগ। এশিয়ান জেনারেল হাসপাতাল লি., ঢাকা।
ফোন : ০১৭১৬২৮৯৮৮৭