শেখ জামাল না ইস্টবেঙ্গল। কে যাবে আজ আইএফএ শিল্ড ফুটবল ফাইনালে। বিকাল পৌনে চারটায় যুব ভারতীয় সল্টলেক স্টেডিয়ামে দুই দলের সেমিফাইনাল লড়াই শুরু হবে। নির্ধারিত সময়ে ফলাফল নিষ্পত্তি না হলে অতিরিক্ত ৩০ মিনিট এতেও যদি ম্যাচ ড্র থাকে তাহলে টাইব্রেকারে ব্যবস্থা করা হবে। কলকাতার স্যাটেলাইট চ্যানেল জলসা ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে। ১১৮তম ভারতীয় ফুটবলে প্রাচীনতম এ টুর্নামেন্টে মোহামেডান আবাহনী ওয়ান্ডারার্স ছাড়াও বাংলাদেশের বেশ কটি দল অংশ নিয়েছে। ফাইনালে খেলার কেউ যোগ্যতা পেয়েছিল কিনা এ তথ্য পরিষ্কারভাবে জানা যায়নি। কেউ কেউ ধারণা করে বলছেন, পঞ্চাশ দশকে ঢাকা মোহামেডান একবার ফাইনাল খেলার সুযোগ পেলেও ইস্টবেঙ্গলের কাছে হেরে ট্রফি জিততে পারেনি। তবে ১৯৫৩ সাল থেকে আইএফএ শিল্ডের রোল অব অনারে কোথাও মোহামেডানের রানার্স আপের কথা উল্লেখ নেই। ভারতের পরিসংখ্যানে ভুল হওয়ার কথা নয়। সে কারণে ধরে নেওয়া যায় আজ ইস্টবেঙ্গলকে হারালেই বাংলাদেশের প্রথম ক্লাব হিসেবে শেখ জামালই ফাইনাল খেলার সুযোগ পাবে।
কথা হচ্ছে মামুনুলরা আজ জিততে পারবেন কিনা? তুলনা করলে দুই দলের শক্তি সমানই বলা যায়। তবে আগের ম্যাচে মোহনবাগানকে হারানোতে শেখ জামালের স্পিরিট এখন অন্য রকম। গতকাল কোচ আসুমি তার শিষ্যদের হালকা অনুশীলন করান। অধিনায়ক মামুনুল টেলিফোনে জানান ইস্টবেঙ্গল অবশ্যই শক্তিশালী। তারপর আবার গ্যালারিতে থাকবে তাদের সমর্থন। কিন্তু আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে জয় ছাড়া মাঠ ছাড়ব না। কাজটা কঠিন, কিন্তু দলে যে স্পিরিট ও সমঝোতা রয়েছে তা ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারলে ফুটবলের সংকট সময় জাতিকে আমরা জয়ের মুখ দেখাতে পারব। ক্লাব সভাপতি মনজুর কাদের বলেন, আমি জানি পুরো দেশ মঙ্গলবার চেয়ে থাকবে আমাদের দিকে। ফুটবলে ব্যর্থতা নিয়ে এমনিতেই দেশবাসী হতাশার মধ্যে আছে। আমি জানি তা সহজে কাটবার নয়। কিন্তু মোহনবাগানের পর সেমিফাইনালে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে ভারতের বিখ্যাত টুর্নামেন্টে আইএফএ শিল্ডে ফাইনালে উঠতে পারি তাহলে হতাশা কিছুটা হলেও দূর হবে। ফলাফল কি হবে তা নিশ্চিত করে বলাটা মুশকিল। তবে আমার বিশ্বাস ছেলেরা হতাশ করবে না। তিনি বলেন, আত্দবিশ্বাস বাড়াতে মোহনবাগানের বিপক্ষে জেতার পরই দলের জন্য ১০ হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছি। ফাইনালে উঠলে আরো পুরস্কার দেওয়া হবে। আমি চাচ্ছি দলের স্পিরিটটা ধরে রাখতে।
এদিকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে উঠলেও ইস্টবেঙ্গল আজকের ম্যাচ নিয়ে বেশ টেনশনে রয়েছে। মোহনবাগানকে হারানোর পর তারা শেখ জামালকে দারুণভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। কলকাতার বিভিন্ন মিডিয়া উল্লেখ করেছে মোহনবাগান ও শেখ জামালের ম্যাচ তারা ভিডিওতে দেখছেন। শেখ জামালের কোন খেলোয়াড়ের মান কেমন বা কাকে কিভাবে আটকাতে হবে তা কাগজে এঁকে ইস্টবেঙ্গলের কোচ ব্রিফ দিচ্ছেন। সনি নর্দে ও অধিনায়ক মামুনুলকে তারা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবেন। বিশেষ করে সনি নর্দে যেন কোনোভাবেই ডি-বঙ্রে ভেতরে ঢুকতে না পারেন সে জন্য মার্কিংয়ে ব্যাপার রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইস্টবেঙ্গলের বিপক্ষে বাংলাদেশের দলের রেকর্ড খুব একটা সুখকর নয়। ১৯৯২ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিটিসি কাপ সেমিফাইনালে আবাহনী ১-০ গোলে ইস্টবেঙ্গলকে পরাজিত করে। ভারত থেকে মোহামেডান, আবাহনী বা মুক্তিযোদ্ধাও বেশ ক'টি ট্রফি জিতেছে। কিন্তু আইএফএ শিল্ড শেখ জামাল জিততে পারলে তা হবে বিশাল প্রাপ্তি। তবে তার আগে আজ সেমিফাইনালে জিতে তারা ফাইনালে উঠুক এ প্রত্যাশা সবারই।