বর্ণবাদকে পরাজিত করতে না পারলে এটিকে হজম করুন। আর এ কাজটিই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষ মহা আনন্দের সঙ্গে করছে। প্রশ্ন উঠতে পারে কিসের প্রভাবে? সামাজিক যোগযোগের মাধ্যমে ব্রাজিলিয়ান ও বার্সেলোনার তারকা খেলোয়াড় নেইমার ও ড্যানি আলভেসের কলা খাওয়ার ছবি দেখে উৎসাহিত হয়েই তারা এমনটি করছেন।
ঘটনাটি রবিবারের। ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার নেইমার সামাজিক মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে তার একটি হাসিমাখা ছবি পোস্ট করেন। ছবিতে তার ছোট্ট ছেলেও রয়েছে। ছবিতে নেইমার ও তার ছেলে উভয়ের হাতেই একটি করে কলা রয়েছে। ছবির নিচে ইংরেজিতে লেখা হ্যাশট্যাগটি হচ্ছে #weareallmonkeys অর্থাৎ বাংলা অর্থ 'আমরা সবাই বানর'। হ্যাশট্যাগটি স্প্যানিশ, পর্তুগীজ ও কাতালান ভাষায়ও লেখা আছে। মজার ব্যাপার হলো, নেইমারের এ হ্যাশট্যাগটি দেখে মুহূর্তের মধ্যেই সামাজিক মাধ্যমগুলোতে হাজার হাজার মানুষ একই কাজ করতে লেগে যায়। উল্লেখ্য, টুইটারে নেইমারের ১০মিলিয়ন ও ইনস্টাগ্রামে ৪.৬ মিলিয়ন ফলোয়ার রয়েছে।
এ থেকে পিছিয়ে থাকেনটি নেইমারের সহখেলোয়াড়েরাও। ইনস্টাগ্রামের ছবিতে উৎসাহিত হন তার স্বদেশি ও বার্সেলোনার সহযোদ্ধা ড্যানি আলভেস। আলভেসও তার বান্ধবীকে নিয়ে কলা খাওয়ার ভঙ্গিতে তোলা ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেন। উল্লেখ্য, আলভেস একবার বর্ণবৈষম্যের শিকার হয়েছিলেন। ভিল্লারিয়ালের বিরুদ্ধে এক ম্যাচে মাঠে তার দিকে কলা ছুড়ে মেরেছিল দর্শককের কেউ। তবে এতে একেবারেই উত্তেজিত হননি তিনি। বরং মাথা ঠাণ্ডা রেখে কলাটি কুড়িয়ে নিয়ে বাকল ছুলিয়ে খেয়ে ফেলেন। তারপরই তিনি বলে শট দেন।
প্রশ্ন উঠতে পারে নেইমার ও ড্যানি আলভেস অন্য কিছু না করে কেন কলা খাওয়ার ভঙ্গিতে তোলা ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করলেন। কলা খাওয়াকে বর্ণবাদবিরোধী আচরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার তাদের ইচ্ছাকৃত প্রচেষ্টা বলেই মনে হচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী ফুটবল মাঠে বানরের মতো শব্দ করা ও কলা নিক্ষেপ বর্ণবাদী আচরণের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। ফুটবল খেলায় বর্ণবাদী আচরণ ঠেকাতে ইউরোপীয়ান ফুটবল এসোসিয়েশন উয়েফা ও ফিফা কত পদক্ষেপই না নিচ্ছে। ফিফার 'বর্ণবাদকে না বলুন' স্লোগান বর্ণবাদ ঠেকাতে যা করে দেখাতে পারেনি তার চেয়ে হয়ত অনেক বেশিই প্রভাব ফেলেছে নেইমার ও আলভেসের পোস্ট করা ছবিগুলো। তারা কলাকে বর্ণবাদের প্রতীক থেকে বর্ণবাদবিরোধী প্রতীক হিসেবেই তুলে ধরতে চেয়েছেন।