একদিকে উচ্ছ্বাস। অন্যদিকে বিক্ষোভ। একদিকে সাড়ম্বরের ঘোষণা। বিপরীতে প্রতিবাদে উত্তাল। ব্রাজিল বিশ্বকাপ ফুটবলের সারজাস এ রকমই। চার বছরের বিরহের পর আবারও ভালোবাসায় সিক্ত হবেন ফুটবলপ্রেমীরা। আজ মধ্যরাতে (বাংলাদেশ সময় রাত ২টা) ব্রাজিল-ক্রোয়েশিয়া ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে 'দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ' বিশ্বকাপ ফুটবল। পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল সবগুলো আসরে খেললেও বলকান অঞ্চলের দেশ ক্রোয়েশিয়া খেলছে এবার নিয়ে চতুর্থবার। ১৯৯৮, ২০০২ ও ২০০৬ সালে খেলা 'দ্য ব্ল্যাজার্স' খ্যাত ক্রোয়েশিয়ার মূল শক্তি আঁটোসাঁটো রক্ষণভাগ।
এক সময় যুগোস্লাভিয়ার প্রদেশ ক্রোয়েশিয়া এখন স্বাধীন রাষ্ট্র। ১৯৯৫ সালে স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম বিশ্বকাপ খেলে ১৯৯৮ সালে। অচেনা, অজানা আনকোরা ক্রোটরা প্রথম আসরেই বাজিমাত করে ডেভর সুকার, জাভোনিমির বোবান, রবার্ট প্রসিনেস্কিদের চোখ ধাঁধানো ফুটবলে। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্র্মানির মতো ফুটবল পরাশক্তিদের স্তব্ধ করে দিয়ে তৃতীয় হয়। যদিও বিশ্বকাপ শুরু করেছিল আর্জেন্টিনার কাছে হেরে। পরের দুই ম্যাচে জিতে জায়গা করে নেয় নক আউট পর্বে। রুমানিয়াকে হারিয়ে মুখোমুখি হয় বিশ্বকাপের সব সময়কার ফেবারিট জার্মানির। ৩-০ গোলে জায়গা করে নেয় সেমিফাইনালে। কিন্তু সেমিতে হেরে যায় জিদানের ভেলকিতে। স্থান নির্ধারণী ম্যাচে নেদারল্যাণ্ডসকে হারিয়ে তৃতীয় হন ডেভর সুকাররা। সুকারদের গোল্ডেন জেনারেশনের পর পথ হারিয়ে ফেলে ক্রোটরা। ২০০২ ও ২০০৬ সালে প্রথম রাউন্ডের বেড়া ডিঙ্গাতে পারেনি। গত আসরে ছিল দর্শক। এবার ফুটবল মহাযজ্ঞে জায়গা করে নেয় প্লে অফে আইসল্যাণ্ডকে হারিয়ে। শেষ মুহূর্তে জায়গা করে নিলেও অনেক দূর যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে নিকো কোভাকের শিষ্যদের। ১৯৯৮ সালের গোল্ডেন বুট জয়ী সুকার মনে করেন এবারের ক্রোয়েশিয়া আগের চেয়ে ভালো করবে, 'ক্রোয়েশিয়ার বর্তমান দলটি অনেক গোছানো। তাদের অনেক দূর যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।' ক্রোয়েশিয়া আসরে খেলবে ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে। এই ফর্মেশনে রক্ষণভাগকে অনেক বেশি আঁটোসাঁটো করেছেন কোচ কোভাক। কোভাকের দলের মূল তারকা লুকা মডরিক। খেলেন ইউরো সেরা ফুটবল ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদে। মধ্যমাঠের মডরিক ছাড়াও রয়েছেন বায়ার্ন মিউনিখের আক্রমণভাগের মারিও মানজুকিচ। বেশ কয়েকজন বিশ্বমানের ফুটবলার থাকলেও দলটির সাফল্য নির্ভর করছে দলের রক্ষণভাগের ভেদ্র্রান করলুকা, দারিও স না, দানিয়েল প্রানইয়াক ও দোইয়ান লোভ্রেনের উপর। এদের আঁটোসাঁটো রক্ষণভাগই এগিয়ে নিবে 'দ্যা ব্লেজার্স'দের।
দলটির রক্ষণভাগ যতটা দুর্ভেদ্য, ঠিক ততটাই দুর্বল আক্রমণভাগ। মানজুকিচ বায়ার্নে খেললেও ফর্মে নেই। এছাড়া স্ট্রাইকারদের ফিনিশিংও যথেষ্ট দুর্বল। আক্রমণভাই ডোবাতে পারে ক্রোয়েশিয়াকে।