মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামেও লেগেছে বিশ্বকাপ ফুটবলের হাওয়া। মূল স্টেডিয়ামে না হলেও সংলগ্ন একাডেমীর ভবনের কাছেই উড়ছে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী কয়েকটি দেশের পতাকা। 'ফুটবল মহাযজ্ঞ' বিশ্বকাপ ফুটবল এতটাই মোহাচ্ছন্ন করে রেখেছে বিশ্বকে যে, অন্য খেলাগুলো নিয়ে ভাবার কোনো সুযোগই পাচ্ছেন না তারা। পাচ্ছেন না বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরাও। রাত জেগে ফুটবলের রসসূধা পান করছেন সবাই। আজ শুরু ভারতের তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ। অথচ স্টেডিয়ামে ঢুকে দুই দলের ক্রিকেটারদের অনুশীলন না দেখলে বোঝারই উপায় ছিল না ক্রিকেট ম্যাচ আছে!
সকালে অনুশীলন করেছেন সুরেশ রায়নারা। বিকালে করেছেন মুশফিকুর রহিমরা। দুই দলের ক্রিকেটাররা অনুশীলন করছেন নিজেদের প্রমাণের জন্য। অথচ মাঠের বাইরে একটাই আলোচনা, বিশ্বকাপ ফুটবল। বিশেষ করে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেনকে যেভাবে বিধ্বস্ত করেছে নেদারল্যান্ডস এবং 'উড়ন্ত পাখি' হয়ে যেভাবে গোল করেছেন রবিন ভ্যান পার্সি, সেটা নিয়ে বিস্তর কাটাছেঁড়া হয়েছে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে। এখানে আজ দিবা-রাত্রিতে খেলা হবে বাংলাদেশ-ভারত ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি। ১৯৮৪ সাল থেকে দুই দেশ পরস্পরের বিপক্ষে ওয়ানডে খেলছে, অথচ এবারই প্রথম ফেবারিটের তকমটা গায়ে সেঁটে নিয়েছেন মুশফিকরা। তবে ফেবারিট কথাটা মানতে রাজি নন টাইগার অধিনায়ক মুশফিক, 'আমাদের টার্গেট অবশ্যই জয়। অবশ্য অনেকদিন পর আমরা ওয়ানডে ক্রিকেট খেলতে নামছি। গত দুই বছর আমরা ভালো ক্রিকেট খেললেও ২০১৪ সালটা ভালো যায়নি আমাদের। তবে আমরা চেষ্টা করব এবার ভালো খেলতে। আমি মনে করি যদি সেরাটা খেলা যায়, তাহলে অবশ্যই জয় পাওয়া সম্ভব। সমস্যাগুলোকে পেছনে ফেলে আমরা নতুনভাবে শুরু করব ইনশাল্লাহ। ভারতীয় দলে একাধিক নতুন ক্রিকেটার থাকলেও আমরা স্পষ্টভাবে এগিয়ে নেই।'
মহেন্দ্র সিং ধোনী, বিরাট কোহলী, রবীচন্দন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা, মোহাম্মদ সামীদের বিশ্রামে রেখে খেলতে এসেছে ভারত। এমন একটি দলের বিপক্ষে স্বাভাবিকভাবেই ফেবারিট টাইগাররা। অবশ্য ভারতীয় দল যাদের নিয়ে খেলতে এসেছে, তাদের সবারই রয়েছে জাতীয় দলের পক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা। এমন ক্ষয়িঞ্চু দলের বিপক্ষে খেলাটা বাড়তি চাপ বলে মানছেন না টাইগার অধিনায়ক, 'ভারতীয়দের বিপক্ষে খেলার চাপের চেয়ে বেশি ২০১৪ সালে একটি ওয়ানডেও জিতেনি। সে হিসেবে ভারতের বিপক্ষে খেলাটাকে কোনো চাপ হিসেবে দেখছি না। বরং উদ্দীপনা হিসেবে দেখছি। যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে, আশা করি তিনটি ওয়ানডেই জিতব।' অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে বিশ্বকাপ ক্রিকেট। তার আগে টাইগাররা আরও একটি সিরিজ খেলবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এই দুটি সিরিজ খেললেই বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিবে টাইগাররা। বিশ্বকাপের আগে এই সিরিজ খুব বেশি প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন না টাইগার অধিনায়ক, 'আমরা সবাই পেশাদার ক্রিকেটার। যেহেতু এটা আন্তর্জাতিক সিরিজ এবং প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং আমাদের সব ফোকাস ম্যাচকে ঘিরেই। বিশ্বকাপে খেলা সবার কাছে স্বপ্নের মতো। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, ভালো করার জন্য আমরা সবাই মুখিয়ে আছি।'
একাদশ কেমন হবে জানাননি অধিনায়ক। তবে নতুন কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহের সঙ্গে কথা বলে সকালে চূড়ান্ত করবেন। এবার ফেবারিট থাকলেও দুই দল এখন পর্যন্ত যে ২৫টি ওয়ানডে খেলেছে, তাতে তিনবার মাত্র জিতেছে টাইগাররা। ২০০৪ সালের পর ২০০৭ সালের বিশ্বকাপ ও ২০১২ সালের এশিয়া কাপে। এবার সংখ্যাটা বাড়ানোর উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে টাইগারদের।
সম্ভাব্য একাদশ : তামিম ইকবাল, এনামুল হক বিজয়, মুমিনুল হক বিজয়, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, নাসির হোসেন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, আব্দুর রাজ্জাক, জিয়াউর রহমান, মাশরাফি বিন মর্তুজা ও আল-আমিন।