মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে ক্রিকেটবিশ্ব তোলপাড়। শুধুমাত্র ব্যাক টু ব্যাক দুইটা সেঞ্চুরি করেছে বলেই নয়! মাহমুদুল্লাহর ঈর্ষণীয় গড় (৮৬) এবং বাংলাদেশের একটা ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ার পরও সেরা পাঁচে জায়গা করে নেওয়ার জন্য। তবে বিশ্ববাসীকে চমকে দিয়েছে রিয়াদের ব্যাটিং স্টাইল। বিশ্বকাপের আগে ১১০ ওয়ানডেতে যাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি সেভাবে, সেই রিয়াদের হঠাৎ উত্থান সবাইকে বিস্মিত করে দিচ্ছে। টিভি ধাষ্যকাররা তো বাংলাদেশ প্রসঙ্গ এলেই মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে প্রশংসায় ভাসিয়ে দিচ্ছেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, রিয়াদ যত আগ্রাসী ব্যাটিংই করুক না কেন আজকের ম্যাচে ভারতীয়দের প্রধান টার্গেট কিন্তু সাকিব আল হাসান। কেননা বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের সামর্থ্য সম্পর্কে ধোনিরা খুব ভালো করেই জানেন। শুধু বোলিং কিংবা শুধু ব্যাটিং দিয়েই ম্যাচের মোড় যেকোনো সময় ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন সাকিব। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে সাকিব কিভাবে চ্যাম্পিয়ন করেছে সেটা নিশ্চয়ই ভারতীয়দের চেয়ে ভালো কারোর জানার কথা নয়। আর বিশ্বকাপ শুরুর আগে মেলবোর্ন রেডিগেডসের হয়ে করা সাকিবের ভয়ঙ্কর বোলিংয়ের ভিডিও চিত্র নিশ্চয়ই ডানকান ফ্লেচার তার শিষ্যদের বার বার দেখিয়েছেন। তাই মাহমুদুল্লাহকে নিয়ে শঙ্কা থাকলেও ভারতীয়রা আতঙ্কিত সাকিবকে নিয়ে।
বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা বিরাট কোহলিকে নিয়ে। গ্রুপ পর্বে ভারত ছয় ম্যাচে সবকটিতে জয় পেয়েছে, কিন্তু কোহলিকে সেভাবে ঝুঁকি নিয়ে ব্যাটিং করতে হয়নি। তবে ভারতীয় তারকা প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করে বুঝিয়ে দিয়েছেন দলের প্রয়োজনে তিনি কতো ভয়ঙ্কর! তাছাড়া অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতের সফল ব্যাটসম্যান তো কোহলিই। তাই বাংলাদেশি বোলারদের টার্গেট থাকবে যত দ্রুত সম্ভব কোহলিকে সাজঘরে পাঠানো যায়।
আজকের লড়াইটা হবে প্রধানত ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে বাংলাদেশি বোলারদের। তিন পেসার মাশরাফি-তাসকিন-রুবেল ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ঘুম হারাম করে দিয়েছেন। তবে প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে মাঠের লড়াইয়ের চেয়ে বড় বিষয় হয়ে দেখা দিচ্ছে 'মনস্তাত্তি্বক' লড়াই। মাঠের লড়াইয়ে ভারতীয়দের চেয়ে টাইগাররা পিছিয়ে থাকলেও মানসিক লড়াইয়ে কিন্তু অনেক এগিয়ে। কেননা বাংলাদেশের হারানোর কিছু নেই। কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার স্বপ্ন পূরণ হয়ে গেছে আগেই। অন্যদিকে মহা চাপে থাকবে ভারতীয় ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠাটা দুইবারের চ্যাম্পিয়ন একটি দলের জন্য বড় কোনো অর্জন নয়। কিন্তু শেষ চারে যেতে না পারলে আগুন জ্বলবে গোটা ভারতে, ২০০৭ সালে বিশ্বকাপে টাইগারদের কাছে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেওয়ার পর যেমন হয়েছিল। আর বাংলাদেশ এ ম্যাচে হারলেও ঠিকই উষ্ণ অর্ভ্যথনা পাবেন সাকিবরা, জিতলে তো কথাই নেই।