রোহিত শর্মার ইনিংস এতটা দীর্ঘ হতে পারতো না। সুরেশ রায়নাও এতগুলো রান করতে পারতেন না। ৯০ রানে রোহিতের নিশ্চিত ক্যাচ আউটটাকে 'হাই-নো'র অজুহাতে বাতিল করে দেন আম্পায়ার। ১০ রানে সুরেশ রায়নার নিশ্চিত লেগ বিফোরের আবেদন ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এই দুইটা আউট না দেওয়ায় ৯২ রান বেশি যোগ হয় ভারতের ইনিংসে। ২১০ রানেই থেমে যেতে পারতো ভারত! বাংলাদেশ ইনিংসে এরচেয়েও ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। ধাওয়ানের পা বাউন্ডারি লাইনে টাচ করার পরও ছক্কাকে আউটে পরিণত করেন আম্পায়ার। আগের দুই ম্যাচে টানা দুই সেঞ্চুরি করা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ইনিংস শুরু হওয়ার আগেই শেষ করে দেন আম্পায়াররা। তামিম ইকবালের কট বিহাইন্ড হলো কি না তা ঠিকমতো রিপ্লেতে দেখানোও হলো না। এমন সব বিরোধিতার মুখেও সিনা টান করে দাঁড়িয়ে লড়াই করছিল টাইগাররা। কিন্তু উপরওয়ালার নির্দেশ বাস্তবায়নে ব্যস্ত নীতি নির্ধারকদের কূটিলতার সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারেননি মাশরাফিরা। বাংলাদেশ এমন একটা ম্যাচ হারলো যেখানে 'লেভেল প্লেয়িং গ্রাউন্ড'ই ছিল না। ভারতের কাছে বাংলাদেশের এ অন্যায় পরাজয় ভক্তদের মনে কতটা ক্ষোভের সঞ্চার করেছে, তারই প্রমাণ মিলল গতকাল। শাহবাগ চত্বর কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাস কিংবা সাধারণ লোকালয়, সবখানেই ছিল আম্পায়ারদের প্রতি ধুয়োধ্বনি। ছিল, প্রচণ্ড ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। বাংলাদেশকে যে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের কাছে ইচ্ছেকৃতভাবে হারানো হয়েছে, এ বিশ্বাস এখন প্রতিটা বাংলাদেশিরই। মিছিলে ছেলে-বুড়োদের উপস্থিতি ছিল বন্যার মতো। এ এমন এক ঘটনা যার বিরোধিতা করার জন্য কোনো ধর্মের প্রয়োজন পড়ে না। প্রয়োজন পড়ে না কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শেরও। বাংলাদেশে ক্রিকেট এমন এক অবস্থান নিয়ে আছে যেখানে মতপার্থক্য ভুলে মানুষ একই সুরে গান গেয়ে উঠে। টাইগারদের গর্জনের সঙ্গে মিশে যায় কোটি কোটি কণ্ঠের চিৎকার। এমন এক ক্রিকেটপাগল জাতির সঙ্গে আম্পায়াররা এ কি আচরণ করল! মার্চ আমাদের স্বাধীনতার মাস। গৌরবের মাস। এমন এক মাসে আমরা আম্পায়ারদের কাছে পরাধীন হিসেবেই দেখতে পেলাম নিজেদের! তবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কোটি কণ্ঠের এ চিৎকার শেষ পর্যন্ত ক্রিকেটের সর্বোচ্চ কর্তাদের শুনতেই হবে। আইসিসি সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামাল তো এরই মধ্যে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন! দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত ক্রিকেটে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের এ আবেগ কোনো ফলাফল আনতে পারে কি না!