খুব বাজে একটি দিন পার করল বাংলাদেশের ক্রিকেট। মাঠে নয়, মাঠের বাইরে। কয়েকদিন পর ভারতের বিপক্ষে ময়দানি লড়াইয়ে নামবে টাইগাররা। অথচ তার আগে দুই দুটি ইনজুরির খবর নাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে। টাইগারদের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার ইনজুরির দিনে আহত হয়েছেন দলের অন্যতম ব্যাটিং স্তম্ভ মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ। মাশরাফি ইনজুরির তেমন গুরুতর নয়। কিন্তু বাঁ হাতের তর্জনীতে চিড় ধরায় ভারত সিরিজে দর্শক হয়ে থাকতে হচ্ছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানো মাহামুদুল্লাহকে। মাহামুদুল্লাহ খেলতে না পারায় ভারতের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে নাসির হোসেনকে। নাসির সর্বশেষ টেস্ট খেলেছিলেন ২০১৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
সকালে অনুশীলন করতে আসার সময় বাসের ধাক্কায় আঘাত পান মাশরাফি। রিকশায় চড়ে অনুশীলনে আসছিলেন টাইগার অধিনায়ক। তখন একটি বাস তার রিকশাকে পাশে থেকে আঘাত করে। এতে তিনি রাস্তায় পড়ে দুই হাতের তালুতে ব্যথা পান। হাতের তালু ছিলে যায় এবং ডান হাঁটুতে সামান্য ব্যথা পান। তবে ব্যথা গুরুতর না হওয়ায় ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ খেলতে কোনো সমস্যা হবে না মাশরাফির। মাশরাফির সমস্যা না হলেও ভারতের বিপক্ষে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ থেকে পুরোপুরি ছিটকে পড়তে হল মাহামুদুল্লাহকে। আহত হয়ে মাঠে ফিরতে তিন থেকে চার সপ্তাহ বিশ্রামে থাকতে হবে মাহামুদুল্লাহকে।
কাল স্বাভাবিক ধারায় অনুশীলন হচ্ছিল মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে। অবশ্য অনুশীলন শুরুর আগেই ব্যথা পান মাশরাফি। সবাই যখন ব্যস্ত আহত মাশরাফিকে নিয়ে, তখনই স্লিপ ক্যাচিং করার সময় বাঁ হাতের তর্জনীতে আঘাত পান মাহামুদুল্লাহ। ব্যথা পাওয়ার পর মাঠের বাইরে চলে আসেন। এরপর এ্ক্স-রে করা হয় এবং পরীক্ষায় দেখা যায় তার হাতের তর্জনীতে চিড় ধরেছে। দুপুরে আরও একবার পরীক্ষা করা হয় অ্যাপোলো হাসপাতালে। সেখানে পরীক্ষার পর ডাক্তাররা চার সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকার পরামর্শ দেন মাহামুদুল্লাহকে। টাইগারদের ফিজিও বায়েজিদুল ইসলাম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেন, 'পরীক্ষায় দেখা গেছে তার হাতের আঙুলে চিড় ধরেছে। এই ইনজুরি এমন যে, সুস্থ হতে ৩-৪ সময় লাগবে। তাই তার পক্ষে খেলা সম্ভব নয়। এই ইনজুরি নিয়ে তার পক্ষে ভারতের বিপক্ষে সিরিজে অংশ নেওয়া সম্ভব হবে না।'
বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের সেরা পারফরমার মাহামুদুল্লাহ। টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করে ইতিহাসের পাতায় চিরস্থায়ী জায়গা করে নেন এই ডান হাতি ব্যাটসম্যান। অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৩ ও হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন ১২৮ রানের নান্দনিক দুই সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপের ফর্মটা ধরে রাখতে পারেননি ঘরের মাঠে পাকিস্তান সিরিজে। তাই ফর্মে ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেন। অনুশীলনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেন। ফিটনেস বাড়াতে কঠোর পরিশ্রম করেন। এসব করতে করতেই কাল আঘাত পান বাঁ হাতের তর্জনীতে।
আঘাত এতটাই গুরুতর যে, তাকে সঙ্গে সঙ্গে বিশ্রাম দিয়ে দেন ডাক্তাররা। জানিয়ে দেন চার সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকার। এর ফলে ১০-১৪ জুন নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা স্টেডিয়ামে একমাত্র টেস্টে খেলতে পারছেন না মাহামুদুল্লাহ। শুধু টেস্টে নয়। খেলতে পারবেন না ১৮, ২১ ও ২৪ জুন তিন ওয়ানডেতেও। ভারত সিরিজ মিস করলেও ফিরবেন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে। দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও দুটি টি-২০ ম্যাচ খেলতে ৩০ জুন ঢাকায় আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সুস্থ হয়ে ৫ জুলাই প্রথম টি-২০ খেলতে পারবেন মাহামুদুল্লাহ। তার জায়গায় ভারতের বিপক্ষে টেস্টে ফিরেছেন ১৬ টেস্ট খেলা নাসির। নাসির সর্বশেষ টেস্ট খেলেছিলেন ২০১৪ সালে গ্রস আইলেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ওই টেস্টে তার স্কোর ছিল ১ ও ২।