চলতি অ্যাশেজের চতুর্থ টেস্টে ইংল্যান্ডকে ১৮৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। স্বাগতিক ইংলিশরা শেষ ম্যাচ জিতলেও সিরিজ ড্র হবে। ফলে আগেরবার ঘরের মাটিতে জেতা অ্যাশেজ শিরোপা এবার আর ইংলিশদের ফেরত দিতে হচ্ছে না অজিদের। এই সিরিজ জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ।
সিরিজ জয়ের পর এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘আমি ব্যাটিং করতে পছন্দ করি, ক্রিকেট খেলা দেখতে নয়’।
বল বিকৃতির কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ১৭ মাস পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরেই ব্যাট হাতে চলমান অ্যাশেজ সিরিজে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্মিথ যা করে চলেছেন, তা যেন রূপকথার গল্পকেও হার মানায়। তিন ম্যাচের পাঁচ ইনিংসে ৩টি সেঞ্চুরি (১টি ডাবল) ও ২টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ৬৭১ রান করেছেন টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ স্থান পুনরায় দখল করা স্মিথ। তার ব্যাটিং ঝলকে প্রথম ও চতুর্থ টেস্ট জিতে অ্যাশেজ শিরোপা ইতোমধ্যেই নিজেদের করেছে অস্ট্রেলিয়া। তবে নিষেধাজ্ঞার কারণে দীর্ঘদিন দলের বাইরে থাকায়, মন ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে স্মিথের। তাই মাঠে ফিরেই বুঝিয়ে দিলেন ক্রিকেট থেকে দূরে থাকাটা কতটা কষ্টের, কতটা বেদনার। ব্যাট হাতে জ্বলে উঠে, রানের ফুলঝুড়ি ফুটিয়ে সমালোচকদের মোক্ষম জবাব দিয়েই যাচ্ছেন স্মিথ।
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বিশ্বকাপ শেষে অ্যাশেজের দলেও সুযোগ পান স্মিথ-ওয়ার্নার। ওয়ার্নার ব্যাট হাতে পুরোপুরি ব্যর্থ হলেও, বিধ্বংসী এক রূপ নিয়ে আছেন স্মিথ। বার্মিংহামে প্রথম টেস্টে ১৪৪ ও ১৪২, লর্ডসে দ্বিতীয় টেস্টর প্রথম ইনিংসে ৯২, দ্বিতীয় ইনিংসে ইনজুরিতে খেলতে পারেননি। পরে তৃতীয় টেস্টেও সুযোগ হয়নি তার। আর চতুর্থ টেস্টে ২১১ ও ৮২ রান করেন স্মিথ। তার এই রানের ফুলঝুড়িতে বিস্মিত ক্রিকেট বিশ্ব। কেউই ভাবেননি এমন দাপটের সাথে নিজের প্রত্যাবর্তন ঘটাবেন স্মিথ।
বিশ্বকাপ চলাকালীন গ্যালারি থেকে ‘প্রতারক-প্রতারক’ বিদ্রুপ শুনেছেন। অ্যাশেজ শুরুর পরও সেই গ্যালারি থেকে লজ্জা পাবার মত কথা শুনতে হয়েছে স্মিথকে। কিন্তু তিনি যে স্মিথ, ভেঙ্গে পড়েননি। সবকিছুর জবাব ২২ গজে ব্যাট হাতে দিয়েছেন। দুর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুণ্য প্রদর্শন করে অ্যাশেজ নিজের দেশেই রাখতে দলের হয়ে মহাগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেন স্মিথ। ফলে চতুর্থ টেস্ট শেষে অনেক বেশি উচ্ছসিত স্মিথ।
তিনি বলেন, ‘গত সপ্তাহে মাঠের বাইরে বসে দলের হার দেখতে ভাল লাগেনি। কিন্তু আজ যে অনুভূতি হচ্ছে, তা ভাষায় বুঝাতে পারবো না। এই ছেলেদের সঙ্গে থাকতে পেরে রীতিমতো গর্ব হচ্ছে আমার।’
ক্রিকেট খেলা দেখতে নয়, ব্যাট হাতে সব সময় দলকে সাফল্য এনে দিতে বদ্ধপরিকর থাকেন বলে জানান স্মিথ, ‘আমি ব্যাটিংকে খুব ভালোবাসি। বড় স্কোর করতে পছন্দ করি। যাতে দল সাফল্য পায়। তবে মাঠের বাইরে বসে খেলা দেখতে আমার ভালো লাগে না। ওভালে খেলতে চাই, আবারো ভালো রান করতে মুখিয়ে আছি। কারণ আমরা এখানে অ্যাশেজ জিততে এসেছি।’
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম