একশ’টি সেঞ্চুরি, প্রায় ৩৫ হাজার আন্তর্জাতিক রান করা শচীন টেন্ডুলকার কখনও কোনও ম্যাচের আগে নার্ভাস হতে পারেন বলে বিশ্বাস করাই কঠিন। তবে ‘মাস্টার ব্লাস্টার’ একবার নিজেই জানিয়েছিলেন- ২০০৩ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে তিনি এতটাই টেনশনে ছিলেন যে, রাতে ঘুমাতেও পারেননি।
এবার ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক কোচ অংশুমান গায়কোয়াড় এমন আরও একটি ঘটনার কথা সামনে আনলেন। যাতে জানা যায়, বিশেষ একটি ম্যাচের আগে শচীন কতটা চাপে ছিলেন।
ইউটিউব শো মিড-উইকেট টেলস-এ গায়কোয়াড় তুলে ধরেন শারজায় ১৯৯৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক ম্যাচের প্রসঙ্গ। ওই ম্যাচে টেন্ডুলকার ১৪৩ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেছিলেন। ম্যাচের আগে মাঠে যাওয়ার সময় টিম বাসে টেন্ডুলকারের অবস্থা কেমন ছিল, সেটাই জানান প্রাক্তন কোচ।
গায়কোয়াড় বলেন, “পরিস্থিতি ছিল এমন যে- আমরা জিতলে তবেই ফাইনালে যাব। স্বাভাবিকভাইভাবেই কঠিন পরিস্থিতি ছিল। তার উপর অস্ট্রেলিয়া অত্যন্ত শক্তিশালী দল। আমরা ম্যাচের জন্য বেলা ১১টায় রওনা হই। টিম বাসে আমি আর শচীন পাশাপাশি বসেছিলাম। ও আমার হাত ধরেছিল। দরদর করে ঘামছিল। আমি জিজ্ঞাসা করি, হয়েছেটা কী? কোনও সমস্যা হচ্ছে? পরে ওকে বলি যে, চাপ নিও না। তুমি সেঞ্চুরি না করলেও চলবে। বলেছিলাম, যাও, গিয়ে শুধু নিজের খেলা খেলো। যদিও সেটা ছিল ভালো লক্ষণ।”
আসলে গায়কোয়াড় বুঝিয়ে দেন যে, শচীন যখনই চাপে থাকেন, তখনই তার কাছ থেকে সেরা ইনিংস বেরিয়ে আসে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ২০০৩ বিশ্বকাপের ম্যাচে ৯৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন টেন্ডুলকার। তার আগে শারজায় শচীনের মরুঝড় তো ভারতীয় ক্রিকেটের লোকগাথায় চিরকালীন জায়গা করে নিয়েছে।
উল্লেখ্য, শারজার সেই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ২৮৪ রানের বড়সড় ইনিংস গড়ে তোলে। মাইকেল বেভান ১০১, মার্ক ওয়া ৮১ ও রিকি পন্টিং ৩১ রান করেন। ভারতের হয়ে বল করেন মোট ৮ জন বোলার। প্রসাদ ২টি উইকেট নেন। টেন্ডুলকার ৫ ওভারে ২৭ রান খরচ করে ১টি উইকেটও তুলে নেন। বল করেছিলেন সৌরভ, কানিতকর, ভিভিএস লক্ষ্মণরাও।
৪ ওভারের খেলা নষ্ট হওয়ায় জয়ের জন্য ৪৬ ওভারে ভারতের সামনে লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ২৭৬ রানের। ভারত ৫ উইকেটের ২৫০ রানে আটকে যায়। ২৬ রানে ম্যাচ হারলেও রান-রেটের নিরিখে নিউজিল্যান্ডকে টপকে টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠে টিম ইন্ডিয়া।
শচীন পরে ফাইনাল ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১৩৪ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন। ভারত শেষমেশ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশে ফেরে। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
বিডি প্রতিদিন/কালাম