ম্যাচের আগে টমাস টুখেল বলেছিলেন পাহাড় টপকানোর বিশ্বাস রাখার কথা। বায়ার্ন মিউনিখ কোচ আশায় ছিলেন মিরাকল কিছুর। বিশ্বাসের প্রতিফলন তার দলের পারফরম্যান্সে পড়ল কিছুটা। কিন্তু অলৌকিক কিছু শেষ পর্যন্ত ঘটাতে পারল না তার দল। মাঠে দাপট দেখালেও বায়ার্ন পারল না চমকপ্রদ কিছু করতে। তবু দলের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট টুখেল। লড়াইয়ে যে হাল ছাড়েনি তার দল।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালের প্রথম লেগেই নিজেদের বিদায়ের পথ অনেকটা পাকা করে ফেলে বায়ার্ন। সিটির মাঠে তারা হেরে যায় ৩-০ গোলে। শক্তি-সামর্থ্যে দারুণ সমৃদ্ধ ও ফর্মে অপ্রতিরোধ্য সিটির বিপক্ষে দ্বিতীয় লেগে সেই ব্যবধান ঘুচিয়ে দেওয়া ছিল অসম্ভবের কাছাকাছি। ঘরের মাঠে বুধবার তবু বেশ উজ্জীবিত শুরু করে বায়ার্ন। সিটিকে চাপেও রাখে যথেষ্ট। কিন্তু গোল বের করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ড্র হয় ১-১ গোলে। সিটি সেমি-ফাইনালে পৌঁছে যায় দুই লেগ মিলিয়ে ৪-১ ব্যবধানের জয়ে।
গত মাসে অনেকটা আচমকাই কোচ ইউলিয়ান নাগেলসমানকে ছাঁটাই করে পরে টুখেলকে দায়িত্বে আনে বায়ার্ন। এরপর এই নিয়ে দুটি টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেল জার্মান দলটি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আগে তারা জার্মান কাপে হেরে যায় ফ্রেইবুর্গের কাছে। তবে বাদ পড়লেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সেমিফাইনালে যেভাবে খেলেছে বায়ার্ন, তাতে তৃপ্ত টুখেল। এমনকি প্রথম লেগে ৩-০তে হারলেও অমন ব্যবধান প্রাপ্য ছিল না বলেই মনে করেন কোচ।
তিনি বলেন, ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে দুটি ম্যাচের পারফরম্যান্স নিয়েই আমি সন্তুষ্ট, বিশেষ করে আজকে আমরা নিজেদের যেভাবে মেলে ধরেছি। বর্তমানে ইউরোপের সেরা দলের সঙ্গে আমরা সমান তালে লড়েছি। পার্থক্যটা ছিল মূলত আত্মবিশ্বাস ও ফর্মে। দুই ম্যাচেই সামান্য যে কয়েকটি ভুল আমরা করেছি, সেটিরই খেসারত দিতে হয়েছে। তবে আমার মনে হয় না, স্কোরলাইনে সত্যিকার লড়াইয়ের প্রতিফলন পড়ছে।”
দ্বিতীয় লেগের প্রথমার্ধেই অন্তত দুটি গোল করতে পারত বায়ার্ন। কিন্তু লেরয় সানে ও জামাল মুসিয়ালা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন সুযোগ। সিটির হয়ে পেনাল্টি পেয়েও গোল করতে পারেননি আর্লি হলান্ড। দ্বিতীয়ার্ধে এই হলান্ডই গোল করে সিটিকে শুধু এগিয়েই দেননি, বায়ার্নের সামান্য সম্ভাবনাটুকুও শেষ করে দেন। পরে জশুয়া কিমিখের গোলে ম্যাচে সমতা ফেরায় টুখেলের দল। বায়ার্ন কোচ এখানে আক্ষেপ করলেন ভাগ্যকে পাশে না পাওয়ায়।
টুখেল জানান, আমরা যথেস্টই সুযোগ তৈরি করতে পেরেছিলাম। তবে সেরা দলকে হারাতে হলে শতভাগের বেশি কিছু প্রয়োজন হয়। কিছুটা ভাগ্য লাগে, হয়তো কারও গায়ে লেগে দিক পরিবর্তন করে বল জালে ঢুকে যেতে পারে, একটা সেট পিস লাগে কিংবা নিজেদের তৈরি করা সুবর্ণ সুযোগগুলোর সবকটি কাজে লাগাতে হয়। আমার মনে হয়, সিটিকে আমরা যথেষ্টই বিপাকে ফেলতে পেরেছিলাম। কিন্তু গত সপ্তাহের মতো (প্রথম লেগ) এবারও ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো ভাগ্যকে পাশে পাইনি আমরা।
বায়ার্ন এখন কেবল টিকে আছে বুন্ডেসলিগায় শিরোপা জয়ের সম্ভাবনায়। এই আসরকে অনেকটা নিজেদের সম্পত্তিই বানিয়ে ফেলেছে তারা। রেকর্ড ৩২ বারের চ্যাম্পিয়ন তারা, সবশেষ ১০বারই টানা জিতেছে শিরোপা। তবে এবার এখানেও দাপট আগের মতো প্রবল নয়। ২৮ ম্যাচ শেষে ৫৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই আছে তারা। তবে মাত্র ২ পয়েন্ট পেছনে আছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। লিগ শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জে আপাতত টুখেলের দুশ্চিন্তা দলের অধারাবাহিকতা নিয়ে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ