সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাজারে আসছে এয়ার ট্যাক্সি

টেকনোলজি ডেস্ক

বাজারে আসছে এয়ার ট্যাক্সি

একাধিক কোম্পানি তাদের উড়ন্ত বাহনটির টেস্ট ড্রাইভের কাজ ইতোমধ্যে সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছে। বিদ্যুৎচালিত উড়ন্ত ট্যাক্সিগুলো এখন শুধু বাজারে নিয়ে আসার পালা।  উদ্ভাবকরা বলছেন, এ যানগুলো পরিবেশবান্ধব ও হেলিকপ্টারের চেয়ে সাশ্রয়ী। এটি সাধারণ একটি প্রযুক্তি।

 

বিশ্বব্যাপী জল ও স্থলপথে রয়েছে হরেক রকম যানবাহন। তবুও সময়ের মধ্যে গন্তব্যস্থলে পৌঁছানো বর্তমান দিনে শহরাঞ্চলের মানুষের কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর নজর এখন আকাশপথ। সাধারণ মানুষের সেই প্রয়োজন মেটাতে আবিষ্কার হয়েছে ফ্লাইং ট্যাক্সি বা eVTOL (ইলেকট্রিক ভার্টিক্যাল টেক-অফ অ্যান্ড ল্যান্ডিং)। এর মাধ্যমে কয়েক মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাওয়া যাবে অফিস বা মিটিংয়ে। এই প্রোটোটাইপ মানুষের চলাচলের এক নতুন যুগের সূচনা হতে পারে। এই ফ্লাইং ট্যাক্সি বা ইলেকট্রিক ভার্টিক্যাল টেক-অফ অ্যান্ড ল্যান্ডিং সর্বসাধারণের জন্য বাজারে নিয়ে আসার দৌড়ে শামিল বিশ্বের একাধিক সংস্থা। কে কার আগে এটি বাজারে চালু করতে পারে সংস্থাগুলোর মধ্যে সেটা নিয়েই চলছে দিন-রাত প্রতিযোগিতা। যদিও একাধিক কোম্পানি তাদের উড়ন্ত বাহনটির টেস্ট ড্রাইভের কাজ ইতোমধ্যে সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছে। বিদ্যুৎচালিত উড়ন্ত ট্যাক্সিগুলো এখন শুধু বাজারে নিয়ে আসার পালা। উদ্ভাবকরা বলছেন, এ যানগুলো পরিবেশবান্ধব ও হেলিকপ্টারের চেয়ে সাশ্রয়ী। এটি সাধারণ একটি প্রযুক্তি। হেলিকপ্টারের তুলনায় অনেক সহজেই এ উড়ন্ত যান তৈরি করা যাবে। বড় সুবিধা হলো, এগুলো অনেকটাই নিঃশব্দে চলে এবং দূষণমুক্ত। ধারণা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে এয়ার ট্যাক্সি একটি বড় বাজার হয়ে উঠবে। কিন্তু কে প্রথম এমন মডেল বাজরে আনবে? অটোমোবাইল, বিমান কোম্পানি এবং ছোট স্টার্টআপ। যেমন- জার্মান ভলোকপ্টার বা জাপানি স্কাইড্রাইভ এমন প্রযুক্তি বাজারে আনার চেষ্টা করছে। স্কাইড্রাইভের সিইও তোমোহিরো ফুকুজাওয়া সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বর্তমান যুগে বিমানে ভ্রমণ করা যাচ্ছে। কিন্তু তা দৈনন্দিন ব্যবহারের উপযোগী নয়। আমাদের লক্ষ্য এমন একটি ছোট ও মৃদু শব্দের বিমান বানানো, যা মানুষ প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারবে।

ইলেকট্রিক এয়ারক্রাফট আকাশে ওড়ার জন্য কোনো রানওয়ের প্রয়োজন নেই। কারণ, এগুলো যে কোনো জায়গা থেকে সরাসরি আকাশে উড়তে পারবে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞই বলছেন, বাস্তবতার চেয়ে এর প্রচার বেশি হচ্ছে। এর ব্যাটারির শক্তি খুব বেশি নয়। তাই এয়ার ট্যাক্সিগুলো ২০ মিনিটের বেশি আকাশে উড়তে পারে না। কিন্তু একটি নিরাপদ ফ্লাইটের জন্য ৩০ মিনিটের রিজার্ভ ফ্লাইংয়ের সময় দরকার। আর তাই দুর্বল ব্যাটারিই এয়ার ট্যাক্সির মূল চ্যালেঞ্জ। বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, এয়ার ট্যাক্সির আরেকটি দুর্বলতা হলো এ যানগুলো অনেক বেশি আবহাওয়া সংবেদনশীল। ভারি বৃষ্টি বা প্রবল বাতাসে এগুলো উড়তে পারে না। আর এই প্রযুক্তি বাজারে আনতে হলেও কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন। এ বিষয়ে স্কাইড্রাইভের সিইও তোমোহিরো ফুকুজাওয়া জানান, নিরাপত্তার বিষয়টি এখানে বড় ভূমিকা পালন করে। যেহেতু এগুলো এয়ারক্রাফট তাই এগুলো চালাতে সিভিল অ্যারোনটিক্স আইন মেনে ভূমি, অবকাঠামো, পরিবহন ও পর্যটন বিভাগের অনুমতি নিতে হবে। আইনি অনুমোদন পেতে বর্তমান এয়ারবাস বা বোয়িংয়ের মতো একই স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আরেকটি বিষয় হলো, এয়ার ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ। এ ক্ষেত্রে একটি উপায় হলো, সঠিকভাবে এর যাত্রাপথ নির্ধারণ করা এবং অবতরণের জন্য সুনির্দিষ্ট ল্যান্ডিং প্যাডের ব্যবস্থা রাখা। বিভিন্ন প্রতিবেদনে এটিকে ‘দ্য ফিফথ এলিমেন্ট’ সিনেমার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। যেখানে দেখা যায়, পুরো আকাশে বিমান উড়ছে। কিন্তু আসলে তা মোটেও এমন নয়। যদি এটিকে বিশেষভাবে নির্ধারিত টেক-অফ এবং ল্যান্ডিং জোনের মতো কল্পনা করা হয়, তাহলে অনেকটা ক্যাবল রেলের মতো হয়ে উঠবে। দেখা যাবে, প্রতিটি গাড়ি মুক্তার মালার মতো সারি বেঁধে উড়ে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর কাঠামো বেশ জটিল হওয়ায় এটি চালাতে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি প্রয়োজন। তবে প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এটি একদিন স্বয়ংক্রিয় হয়ে উঠবে।

সর্বশেষ খবর