লন্ডন চিড়িয়াখানা
বিখ্যাত লন্ডন চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ১৮২৮ সালে। প্রথমে বৈজ্ঞানিক গবেষণার বিষয়টি প্রাধান্য পেলেও পরে চিড়িয়াখানাটি সবার জন্য খুলে দেওয়া হয়। ১৮৪৭ সাল থেকে এটি দর্শনার্থীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এটিই প্রথম চিড়িয়াখানা যেখানে প্রথম সরীসৃপ আবাসস্থল, প্রকাশ্য অ্যাকুয়্যারিয়াম, কীটপতঙ্গের আবাসস্থল রয়েছে। ব্রিটেনে বহু বিখ্যাত চিড়িয়াখানা থাকলেও আকার ও বিভিন্ন বিরল প্রজাতির প্রাণীর সংগ্রহ থাকায় লন্ডন চিড়িয়াখানা অনন্য। এ চিড়িয়াখানায় কাঠবিড়াল, বানর থেকে গরিলা এবং ম্যাকাও পর্যন্ত সোবেল প্যাভিলিয়ন বেশ জনপ্রিয়। মাত্র ৩৭ একর জমির ওপর অবস্থিত এ চিড়িয়াখানায় প্রাণীর সংখ্যা বাড়তে বাড়তে ছাড়িয়েছে ২০ হাজারেরও বেশি। ফলে সংখ্যার দিক দিয়ে এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম চিড়িয়াখানা। বছরের ৩৬৪ দিনই খোলা থাকে এটি। এই চিড়িয়াখানা স্তন্যপায়ী প্রাণীদের আবাসস্থল যেখানে বিশ্বের সেরা স্তন্যপায়ী প্রাণীদের সংগ্রহ আছে। নিচতলা কেবল দিবালোকের প্রাণীদের জন্য তৈরি; অন্যদিকে বেসমেন্টটি নিশাচর প্রাণীদের জন্য তৈরি। যেমন- তাসমানিয়ান ডেভিল ও বাদুড়। লন্ডনের এই চিড়িয়াখানায় কোয়াল এবং পান্ডাও দেখা যায়। সব মিলিয়ে লন্ডন চিড়িয়াখানা একটি আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান। এই চিড়িয়াখানার অ্যাকুয়ারিয়াম দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। বিরল সামুদ্রিক মাছ এবং সামুদ্রিক প্রাণীরা এ অ্যাকুয়ারিয়ামে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একটি লম্বা কক্ষে অবস্থিত প্রায় ২ লাখ গ্যালন পানি ও শত শত ট্যাংক সামুদ্রিক লবণাক্ত পানি ভরা হয়েছে এই অ্যাকুয়ারিয়ামে। বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য এ চিড়িয়াখানা বেশ প্রসিদ্ধ। ভেড়া, খরগোশসহ বিভিন্ন প্রাণীদের সঙ্গে শিশুরা খেলতে পারে, তাদেরকে স্পর্শ করতে পারে। এই প্রাণীগুলোকে সেভাবেই প্রশিক্ষিত করা হয়েছে।
বেইজিং চিড়িয়াখানা
চীনের সবচেয়ে পুরনো পার্ক ছিল এটি। তখন থেকেই মানুষের কাছে পরিচিত বেইজিং পার্ক। সেখানেই এক সময় গড়ে ওঠে বিশাল চিড়িয়াখানা। এই চিড়িয়াখানাটি পান্ডা লালনপালন ও বিলুপ্তি রোধে গোটা বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। বেইজিং চিড়িয়াখানায় জায়ান্ট পান্ডা আছে। প্রতিবছর ৬০ লক্ষাধিক মানুষ ঘুরতে আসেন এখানে। আছে হাজার খানেক প্রজাতির ১৪ হাজার ৫০০টি প্রাণী। বিশালাকার চীনা স্যালামান্ডার, জায়ান্ট পান্ডা আর দক্ষিণ চীনের এক বিরল প্রজাতির বাঘ রয়েছে এ চিড়িয়াখানায়। এগুলো এই চিড়িয়াখানার মূল আকর্ষণ। ২২০ একর জমিতে নির্মিত এ চিড়িয়াখানাটি আয়তনের দিক থেকেও পৃথিবী বিখ্যাত। এর আসল সৌন্দর্য এর পরিকল্পিত ও সুসজ্জিত পার্কগুলো। এই চিড়িয়াখানার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করা হয় ১৯০৬ সালে।
বার্লিন জ্যুওলজিক্যাল গার্ডেন
বার্লিন জ্যুওলজিক্যাল গার্ডেন প্রাণীর সংখ্যার দিক থেকে পৃথিবীর বড় চিড়িয়াখানাগুলোর মধ্যে একটি। চিড়িয়াখানাটি দুই ভাগে বিভক্ত। এক পাশে প্রাণী এবং অন্যদিকে অ্যাকুয়ারিয়াম। চিড়িয়াখানা উদ্বোধন হয়েছে ১৮৪৪ সালে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই চিড়িয়াখানা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। ৬৪ হেক্টর জমি নিয়ে তৈরি এই চিড়িয়াখানায় ২০১০ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৭ হাজার ১৩৪টি প্রাণী এবং ১ হাজার ৫৫৪টি বিভিন্ন প্রজাতির গাছগাছালি রয়েছে। প্রাণীর সংখ্যা ২০১৭ সালে ২০ হাজার ২০০ ছাড়িয়েছে। তাছাড়া পৃথিবীর বৃহত্তম অ্যাকুয়ারিয়ামের মর্যাদাও বার্লিন চিড়িয়াখানারই। এর অ্যাকুয়ারিয়ামে ৫৬২ প্রজাতির মাছ রয়েছে। এই চিড়িয়াখানায় ইউরোপের সবচেয়ে বেশি লোক আসেন এবং সারা পৃথিবী থেকে আসেন বছরে প্রায় ৩ মিলিয়ন পর্যটক।
হেনরি ডোরলি চিড়িয়াখানা
যুক্তরাষ্ট্রের পুরনো চিড়িয়াখানার একটি হেনরি ডোরলি। ১৮৬৪ সালে এটি দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। নেব্রাস্কার এ চিড়িয়াখানার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ কৃত্রিম মরুভূমি। এ চিড়িয়াখানায় ১৭ হাজার প্রাণীর বাসস্থান। এখানে ৯৬২ প্রজাতির প্রাণীদের নিয়ে প্রতিনিয়ত চলছে উন্নত গবেষণা। সেসব গবেষণা আবার সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, পৃথিবীর সবচেয়ে কম প্রাণী মৃত্যুর হার এ চিড়িয়াখানাতেই। এখানে প্রচুর বৈচিত্র্যময় পশুপাখির আবাস। পশুপাখির সংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে এর অবস্থান তৃতীয়। ভিতরে রয়েছে নিশাচর প্রাণীদের দারুণ প্রদর্শনী। আছে সুবিশাল ইনডোর রেইনফরেস্ট। প্রাণীদের ওপর গবেষণা ও সংরক্ষণের জন্য চিড়িয়াখানাটি বিশ্বে প্রসিদ্ধ।