রংপুর এখন মাদক পাচারের নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে। যদিও মাঝে মাঝে মাদক বহনকারিরা ধরা পড়ে তবে মূল ব্যবসায়ীরা রয়ে যায় ধরা ছোঁযার বাইরে। এত মাদক আসে কোথা থেকে যায় কোথায়-এসব প্রশ্ন এখন সাধারণ মানুষের। এছাড়াও দিন-দিন বেড়েই চলছে মাদক সেবীর সংখ্যা। প্রায় প্রতিদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মাদক পাচারকারি এবং সেবনকারীরা গ্রেফতার হলেও থামানো যাচ্ছে না মাদকের রমরমা ব্যবসা।
বিষয়টি অভিভাবক ও সচেতন মহল এখন চিন্তিত। গত এক মাসে কমপক্ষে ১৫টি মাদকের চালন ধরা পড়েছে র্যাব এবং পুলিশের হাতে। দেশের চলমান পরিস্থিতিতেও থেমে নেই রংপুর অঞ্চলে মাদক পাচারের রমরমা ব্যবসা। আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কিছুটা শিথিলতার সুযোগে মাদক ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
গত বুধবার (১৬ অক্টোবর) জেলার কাউনিয়া রেলওয়ে স্টেশনে বিশেষ অভিযান চালিয়ে লালমনিরহাট হতে সাস্তাহারগামী মেইল ট্রেন থেকে সাড়ে ৩ কেজি গাঁজাসহ এক বৃদ্ধ দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে রেলওয়ে পুলিশ।
এর আগে গত ১৫ অক্টোবর র্যাব-১৩ এর পৃথক অভিযানে ৬৮০ বোতল ফেনসিডিল ও ৭২৯ পিস বুফ্রেনরফিন এ্যাম্পুল ইনজেকশনসহ ৪ মাদক ব্যবসয়ীকে গ্রেফতার করা হয়।
জানা গেছে. ফেনসিডিল,গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদক লালমিনহাট, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম জেলা সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে। পরে ওইসব মাদক দ্রব্য রংপুর হয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে পাচার হয়। সীমান্তবর্তী জেলাগুলো ছাড়াও তিস্তার চর এলকায় চলে মাদকের রমরমা ব্যবসা।
মাদক ব্যবসায়ীদের সূত্র জানায়, ভারতের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে ফেনসিডিল উৎপাদনের কারাখানা রয়েছে। সেখানকার কারখানায় উৎপাদিত ফেনসিডিল বিভিন্ন সীমান্ত গলিয়ে দেশে প্রবেশ করছে।
আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, লালমনিরহাটের সীমান্ত দিয়ে পাচার হওয়ার মাদক প্রথমে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় প্রবেশ করে। এর পরে শহর হয়ে বিভিন্নস্থানে পাচার হয়। এছাড়া কুড়িগ্রামের সীমান্ত দিয়ে সড়ক পথে রংপুর নগরীতে মাদক আসে। এসব মাদকের একটি উল্লেখযোগ্য স্থানীয়রা সেবনের জন্য ব্যবহার করছে। বাদবাকি পাচার হয়।
এছাড়াও দিনাজপুরসহ আরও একাধিক রুট দিয়ে রংপুরে মাদক প্রবেশ করছে। সূত্রমতে মাদক সিন্ডিকেটের সাথে ছোটবড় মিলিয়ে কমপক্ষে ২০০ ব্যক্তি জড়িত রয়েছে। এর মধ্যে ১৫/২০ জন মাদকের বড় ব্যবসায়ী রয়েছেন। মাদক বহনকারিরা ধরা পড়লেও পাচারের সাথে যুক্ত বড়বড় ব্যবসায়ীরা রয়ে যাচ্ছে দৃষ্টির বাইরে।
মাদকের পাচার বিষয়ে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি একটি মিটিংয়ে আছি। এবিষয়ে পরে কথা বলব।
বিডি প্রতিদিন/আশিক