বুধবার, ২১ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা
বিদায় মাহে রমজান

তাদের জান্নাতে দেওয়া হবে

মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী

আজ পঁচিশে রমজান। আর কদিন পর রমজান বিদায় নেবে। কিন্তু সায়েমের সাধনা শেষ হবে না রমজানের পরও। বরং রমজানের পর থেকে শুরু হবে আরও দীর্ঘকালীন সিয়াম। বলা যেতে পারে শওয়ালের প্রথম তারিখ থেকে দিনব্যাপী নয়, সার্বক্ষণিক সিয়াম শুরু হবে। রমজান মাসে প্রতিদিন সুবেহ সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জৈবিক চাহিদা পূরণ থেকে নিজেকে সংযত রাখতে হয়। কিন্তু সংযমের নির্দেশ মুমিনের প্রতি সারা জীবনের জন্য। একজন বান্দা যখন কলেমায়ে শাহাদাত পাঠ করে মুসলমান হন, তখনই তার কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায় পানাহারসহ সব ভোগ আস্বাদন নিয়ন্ত্রিত রাখা। এটিই তো ইসলামের বৈশিষ্ট্য। এক্ষেত্রে সুবেহ সাদিক থেকে সূর্যাস্তের মেয়াদ সীমাবদ্ধ নয়। যেদিন আল্লাহর দরবারে হাজির হতে হবে, দুনিয়াবি জীবনের প্রতিটি কথা, কাজ ও আচরণের হিসাব দিতে হবে, সেদিন সেই হিসাব-নিকাশে যদি উের যাওয়া যায়, তা হলে রহমাতুল্লিল আলামিন হাউসে কাওসারের শরবত দিয়ে এসব রোজাদারকে ইফতার করাবেন। তারপর তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হবে জান্নাতে, যেখানে তাদের উপভোগের জন্য তৈরি রাখা হয়েছে এমন নেয়ামতরাজি, যা কোনো চোখ দেখেনি, কোনো কান শোনেনি, এমনকি কোনো মানুষের কল্পনায়ও আসেনি। সেটিই তো প্রত্যেক মুমিনের কাম্য। অতএব নিজের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, কামনা-বাসনা ও ঝোক প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে রাখা যদি সিয়াম বলে আখ্যায়িত হতে পারে, তা হলে রমজান মাস পার হলেও সেই সিয়ামের হুকুম বহাল থাকবে, জীবনভর থাকে সায়েমের জীবনে। নিয়ন্ত্রিত ও নিয়মতান্ত্রিক জীবন নির্বাহ করা ইসলামের অন্যতম মৌলিক শিক্ষা। প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানাহার, নিছক উদরপূর্তি কিংবা রসনা তৃপ্তির জন্য আহার মুমিনের আদর্শ নয়। মুমিনের প্রতিটি কাজ হতে হবে উদ্দেশ্য ও ফলাফল বিবেচনায় রেখে। পার্থিব স্বার্থ ও সুবিধার চেয়ে আখেরাতের কল্যাণকে প্রধান্য দিতে হবে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ইসলাম গ্রহণের ফলে একজন ব্যক্তির জীবনে অন্যতম সৌন্দর্য আসে এই যে, সে অহেতুক কাজ ছেড়ে দেয়। রমজানের তিরিশ বা ঊনত্রিশ দিনের পর পানাহার ও কামাচার নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ রহিত হবে না। সবক্ষেত্রে তাকে আল্লাহর নির্দেশ ও রসুলুল্লাহর নির্দেশনা মেনে চলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। লেখক : বিশিষ্ট মুফাসসিরে কোরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, www.selimazadi.com

সর্বশেষ খবর