গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শ্রমিক অধিকার ও নারী বিষয়ক আরও চারটি নতুন সংস্কার কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। অনুমোদিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান বিশিষ্ট কলামিস্ট কামাল আহমেদ, স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের প্রধান জাতীয় অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ খান, শ্রমিক অধিকার সংস্কার কমিশনের প্রধান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতানউদ্দিন আহমেদ ও নারী বিষয়ক কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নারী পক্ষের শিরিন পারভীন হককে।
গতকাল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ চারটি কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত ও অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে এই চার সংস্কার কমিশন গঠনের কথা জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
চার নতুন সংস্কার কমিশন গঠন হলেও শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কার নিয়ে কমিশন না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, শিক্ষা খাতের সংস্কারের বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনার মধ্যে আছে। ভবিষ্যতে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।
ব্রিফিংয়ের শুরুতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের ইস্যু তুলে ধরা হয়। কমিশন গঠন ছাড়াও উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্তগুলো হলো- জুলাই অভ্যুত্থানে প্রতিটি শহীদ পরিবারকে প্রাথমিকভাবে ৩০ লাখ টাকা করে সহায়তা; যেসব কর্মকর্তা হাসপাতাল থেকে নিহত ও আহতদের কাগজপত্র সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন, তাদের তদন্ত করে শাস্তির আওতায় আনা; শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় দায়িত্ব দেওয়া; সরকারি ছুটি অনুমোদন এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী অধ্যাদেশ সংশোধন। এ ছাড়া চাকরির বয়সসীমা ইস্যুটি উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপন হলেও সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি সরকার আরও পর্যালোচনা করতে চায় বলে জানানো হয়। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দাবির বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের ৮টি দাবির বেশির ভাগই যৌক্তিক উল্লেখ করে ব্রিফিংয়ে বলা হয়, সরকার সবার জন্য নিরাপদ রাষ্ট্র গড়তে বদ্ধপরিকর।
বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী অধ্যাদেশ সংশোধন অনুমোদনের বিষয়টি তুলে ধরে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, এ অধ্যাদেশটি করার সময় এতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় ম্যাজেস্ট্রেসি ক্ষমতা ছিল। পরে সেটি বাদ দেওয়া হয়েছিল। উপদেষ্টা পরিষদ সংশোধন করে আবার ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার ফিরিয়ে এনেছে। কারণ জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে যে অনিয়ম হচ্ছে, সেগুলো বন্ধ করার জন্য এই ক্ষমতার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছে অন্তর্বর্তী সরকার।