রাজশাহীতে আলুর আবাদের ভরা মৌসুমে সার নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা। এক বস্তা সার সংগ্রহ করতেই চাষিদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সার মিললেও বস্তাপ্রতি ক্ষেত্রবিশেষে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ৫০০ টাকা। ডিলারদের দাবি, রাজনৈতিক নেতাদের অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপে সারের বাজারে বিশৃঙ্খলা চলছে। তবে কৃষকদের অভিযোগ, প্রতিবারই ডিলাররা সারের অতিরিক্ত মূল্য নিতে রাজনৈতিক দলের নেতাদের ব্যবহার করেন।
জেলার ৯ উপজেলার আলু চাষি ও সারের ডিলারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগের বছরগুলোর তুলনায় বাজারে এখন আলুর দাম চড়া। এ কারণে গত বছর থেকে জেলা নির্ধারিত কৃষি জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর রাজনৈতিক নেতারা ডিলারদের বরাদ্দ থেকে অধিকাংশ সার নিয়ে নিচ্ছেন। তাদের কাছে কৃষক ও ডিলাররা জিম্মি হয়ে পড়েছেন। তবে এই পরিস্থিতির জন্য ডিলারদের দায়ী করছেন কৃষকরা। তাদের দাবি, সার সিন্ডিকেট টিকিয়ে রাখতে ও কৃষকদের নিয়ন্ত্রণ করতে ডিলাররা রাজনৈতিক দলের নেতাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন। আর সেই সুযোগটাই ব্যবহার করেন নেতারা।
এদিকে রাজশাহী জেলায় নভেম্বর মাসে ২ হাজার ৮০৬ মেট্রিক টন টিএসপি ও ৫ হাজার ৪৩২ মেট্রিক টন এমওপি সার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে চলতি মাসের (ডিসেম্বর) সব সারই তুলেছেন সংশ্লিষ্ট ডিলাররা। ৫০ কেজির এক বস্তা ডিএপি সারের সরকারি মূল্য ১ হাজার ৫০ টাকা হলেও কৃষককে কিনতে হচ্ছে ১ হাজার ৪৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। ৫০ কেজির এক বস্তা পটাশের সরকারি দাম ১ হাজার টাকা। কিন্তু চাষিদের কিনতে হচ্ছে ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায়। এক বস্তা টিএসপির সরকারি দাম ১ হাজার ২৫০ টাকা। কিন্তু কৃষকদের কিনতে গুনতে হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকা পর্যন্ত। কৃষকদের প্রতি বস্তায় অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, ক্ষেত্র বিশেষে ৫০০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে তাদের।
তানোরের কামারগাঁও বাজারের সার ডিলার মৌসুমী ট্রেডার্সের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে একদল মানুষ স্যারের জন্য অপেক্ষা করছে। তবে কৃষকদের সার না দিয়ে স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতার তদবিরে কেউ কেউ ট্রলিতে করে সার নিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে ডিলার বিকাশ কুমার দাস সাংবাদিকদের বলেন, এবার চাহিদার তুলনায় সারের বরাদ্দ কিছুটা কম। সেই সঙ্গে প্রভাবশালী কেউ কেউ বেশি পরিমাণে সার নিতে চাপ দিচ্ছে। এ কারণে কেউ কেউ সার পাচ্ছে না বা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।