বাংলাদেশি আমেরিকান ড. রায়ান সাদী যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ বেতন পাওয়া ১৫ জন সিইওর (চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার) তালিকায় নবম স্থানে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। গত বছর স্টক মার্কেটে ড. সাদীর নেতৃত্বাধীন ওষুধ গবেষণা সংস্থা ‘টেভোজেন’-এর আর্থিক গতি-প্রকৃতি এবং আয়ব্যয়ের যে তথ্য ‘ইক্যুইলার’ প্রকাশ করেছে, তা নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস দীর্ঘ পর্যালোচনার ভিত্তিতে সম্প্রতি তালিকাটি প্রকাশ করেছে। সে অনুযায়ী ড. রায়ানের বার্ষিক বেতন এখন ৮৭.৭৬ মিলিয়ন ডলার বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ হাজার ৭৯ কোটি ৩ লাখ টাকা। নিউজার্সিতে অবস্থিত বায়ো-টেকনোলজি কোম্পানি ‘টেভোজেন বায়ো’র সিইও ও গবেষণা টিমের প্রধান ড. রায়ান হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে সর্বোচ্চ আয়ের কর্মকর্তা। তালিকায় আছেন দুই ভারতীয় আমেরিকানও। এদের একজন সাইবার সিকিউরিটি ফার্ম ‘রুব্রিক’র সিইও বিপুল সিনহা (বার্ষিক আয় ১৪০ মিলিয়ন ডলার) এবং আরেকজন অনলাইন ডেটা স্টোরেজ প্ল্যাটফর্ম ‘স্নোফ্ল্যাক’র সিইও শ্রীধর রামস্বামী (আয় ১০১ মিলিয়ন ডলার)। যুক্তরাষ্ট্রে করপোরেশনগুলো পরিচালনায় বিশেষ কয়েকটি নীতি অনুসরণ করতে হয়।
এর মধ্যে রয়েছে আমদানি-রপ্তানির কর প্রদান, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সতর্কতা অবলম্বন, বহুত্ববাদ, সমতা এবং করপোরেশনে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থাপনা। এর ভিত্তিতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের সর্বজনীন মর্যাদার ব্যাপারটি নির্ধারিত হয়েছে বলে নিউইয়র্ক টাইমসের পর্যবেক্ষণ-প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
করোনা মহামারির সময় টেভোজেন বায়ো’র সিইও ড. সাদী উদ্ভাবিত ‘টিভিজিএন-৪৮৯’ ও ‘সাইটোটটিক্স টি লিম্ফোসাইটস’র ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি দেয় এফডিএ (ফেডারেল ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)। সেই সঙ্গে দুরারোগ্য ক্যান্সার নির্মূলের লক্ষ্যে ড. রায়ান উদ্ভাবিত ‘টি সেল থেরাপি’র গুরুত্ব অনুধাবনের পরই সারাবিশ্বে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-পর্যালোচনা হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ২০২২ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) কে-৪০ ব্যাচের শিক্ষার্থী ডা. সাদী।
উল্লেখ্য, ড. সাদী ১৯৬৪ সালের ৬ ডিসেম্বর পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তৈয়ব হোসেন ও আসমা বেগম দম্পতির বড় সন্তান তিনি। ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। কুষ্টিয়া জেলা স্কুল থেকে এইচএসসির পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। এরপর তিনি উচ্চশিক্ষার্থে পাড়ি জমান আমেরিকায়। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা-বিজ্ঞানে লিডারশিপ, ইয়েল ইউনিভার্সিটিতে হেলথ পলিসি এবং অর্থনীতিতে উচ্চতর ডিগ্রি গ্রহণ করেন তিনি। স্ত্রী ডা. জুডি আক্তার ও একমাত্র মেয়ে এমিলিকে নিয়ে নিউজার্সি রাজ্যের ওয়ারেন সিটিতে বসবাস করছেন ড. সাদী।