আনন্দ ও উদ্বেগের দু’টি খবর। দু’টিই চট্টগ্রামের অমর একুশে বইমেলা ২০২০’কে ঘিরে। বিকেলে এই মেলা উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। এবার অনেকটা ভিন্ন আঙ্গিকে মেলা আয়োজনের আশাবাদ ছিল ।
উদ্বোধনী দিনেই আনন্দের খবরটি হল, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন মনোনয়নকে কেন্দ্র করে দুই প্রধান দলেই যখন উদ্বেগ উত্তেজনা-উৎকণ্ঠা, ঠিক তখনই বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত এবারের বইমেলা মঞ্চে বসলেন বন্দর নগরীর পাথরঘাটা ওয়ার্ড থেকে নির্বাচিত বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর ইসমাইল বালী ও মোহরা ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর মোহাম্মদ আজম।
অবশ্য সর্বজনীনতার দিক থেকে চিন্তা করলে খবরটি আনন্দের হলেও রাজনৈতিক বিবেচনায় 'কপাল মন্দ' বলা চলে এই দুই কাউন্সিলরের। ইতোপূর্বে বিএনপি সমর্থিত সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর মহিলা দলের সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি আওয়ামী লীগ সমর্থীত মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের প্রশংসা করায় দলীয় পদ হারিয়েছেন।
অন্যদিকে উদ্বেগের খবর হলো যে, চট্টগ্রামে সার্বজনীন বইমেলা আয়োজনে চসিক মেয়রের আহবানে সবাই যুথবদ্ধ হয়ে দ্বিতীয় বারের মত বইমেলাটি আয়োজন করলেও মেলা মঞ্চে ছিল কেবলই কাউন্সিলরসহ চসিক কর্তাদের আধিক্য।
গতবারও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে কাউন্সিলরদের উপস্থিতি ছিল টইটুম্বুর। এবার যাতে তেমনটি না হয় সেজন্য সংশ্লিষ্টরা তাগাদা দিয়েছিলেন মেলা কমিটির আহ্বায়ক ও চসিক শিক্ষা স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল হক ডিউককে। কিন্তু কথা রাখেননি ডিউকসহ দায়িত্বশীলরা। মঞ্চ জুড়েই মেয়র এর পাশাপাশি ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা, স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলররাই।
এছাড়া অন্য একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত সাবেক উপচার্য, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, বিভিন্ন সংগঠনের শীর্ষ প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, লেখক বুদ্ধিজীবীসহ অন্য কাউকে মঞ্চে তোলা হয়নি।
মেলার আয়োজকদের এমন উদাসীনতা কিংবা অসচেতনতার কারণে প্রশ্ন উঠেছে এই মেলা কি নিছক চসিকের, নাকি সর্বজনীন?
অবশ্য মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন বরাবরই সবাইকে নিয়ে মেলা আয়োজনের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই যে অব্যবস্থাপনা বা দৃষ্টিকটুতা রয়েছে তার নেপথ্যে কারণ কি? এ কি তবে মেয়র নাছির উদ্দিনকে স্যাবোটাজ করা হচ্ছে? এমন নানা প্রশ্ন এখন বইমেলার মাঠ ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছে শহরের পথে ঘাটে।
মেলা কমিটির চেয়ারম্যান নাজমুল হক ডিউক অবশ্য বলেছেন, সামনেই নির্বাচন । তাই কোন বিব্রতকর পরিস্থিতি চাননি।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক
