রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) শিক্ষার্থী মাড়িয়ার মৃত্যুতে চলমান আন্দোলন নিয়ে ফেসবুকে মন্তব্য করায় ছাত্রলীগ নেতাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ছাত্র প্রতিনিধি দলের চাকরির আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা করে ফেসবুকে পোস্ট করায় শেকৃবি ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী কর্তৃক সহ-সম্পাদক সারোয়ার আহমেদকে বাধ্য করে ফেসবুক পোস্ট মুছে ফেলা ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেছে। রবিবার বিকেলে কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের ৩১২ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাড়িয়ার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ৭ দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আন্দোলন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা, যার নেতৃত্বে ছিল শেকৃবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আন্দোলন চলাকালে এক পর্যায়ে দাবি আদায় না হলেও আন্দোলন বাদ দিয়ে শিক্ষার্থীদের স্থান ত্যাগ করতে বলে ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ। এসময় শিক্ষার্থীরা যেতে না চাইলে তাদেরকে স্থানত্যাগে বাধ্য করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করে বিভিন্ন পোস্ট দেয়। ‘শেকৃবি আন্দোলন = প্রতিনিধি দল + চাকুরি’ এমন এক ফেসবুক পোস্টের জের ধরে সারোয়ার আহমেদকে হুমকি ও শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে ছাত্রলীগেরই কিছু নেতাকর্মী।
ভুক্তভোগী সারোয়ার বলেন, ‘মাড়িয়া আমার ব্যাচমেট। তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। তার মৃত্যুর সঠিক তদন্তের দাবিতে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি জানাতে থাকি। একপর্যায়ে তারা আমাদের স্থানত্যাগ করতে বলে। এর প্রেক্ষিতে আমরা ফেসবুকে আমাদের দাবি জানিয়ে পোস্ট করি। একারণে ছাত্রলীগ নেতা আদিব, সাজ্জাত সৌরভ, সামিউল হক ফারুকী এবং কর্মী রমজান এসে আমাকে পোস্ট ডিলিট করার জন্য বলতে থাকে। তারা আমাকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মিঠু ভাই ও সেক্রেটারি মিজান ভাইয়ের সাথে দেখা করতে বলে। আমি স্ট্যাটাস ডিলিট করতে রাজী না হলে রমজান আমার শরীরে আঘাত করে। আমি আমার উপরে আবারো হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি। আমি তাদের বিচার চাই।’
অভিযোগের ব্যাপারে রমজান বলেন, ‘সে কি এখন হাসপাতালে? তাকে মারার জন্য কি আমার ফাঁসি হবে? আমি সারোয়ারকে চিনি না।’
এবিষয়ে কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি এরকম একটি খবর পেয়েছি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে জানিয়েছি। আমরা এবিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো। শেকৃবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, আমি তাদেরকে সারোয়ারের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা দেইনি। তারা দুই পক্ষই আমাদের ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। আমরা দুই পক্ষের সাথে কথা বলে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেবো।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল