ঢাকা কলেজের প্রাক্তন ছাত্ররা ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির বিতর্কিত খসড়া সংশোধন না হলে কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করেছেন। ঢাকা কলেজ ঐতিহ্য ও স্বকীয়তা সংরক্ষণ রক্ষা কমিটি সরকারের কাছে ১০ দফা দাবি তুলে দিয়েছে। চার দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন এবং পরে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুশিয়ারি দেন তারা।
কমিটির আহবায়ক ও ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু বলেন, হাইব্রিড পদ্ধতির বদলে অক্সফোর্ড, ফেডারেল বা অন্যান্য মডেল অনুসরণ করে ঢাকা সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সাতটি কলেজ পরিচালিত হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান খসড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় করলে সাতটি কলেজ নিজস্ব স্বকীয়তা হারাবে, পাশাপাশি ইডেন ও বদরুন্নেসা কলেজের নারী শিক্ষা সংকোচিত হবে। তাই ১৬ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধনসহ কঠোর কর্মসূচি নেওয়া হবে।
কমিটি দাবি করেছে, ঢাকা কলেজসহ সাতটি সরকারি কলেজের স্বাতন্ত্র্য ও ঐতিহ্য বজায় রেখে শিক্ষাকার্যক্রম প্রতিযোগিতামূলকভাবে চালাতে হবে।
কমিটির ১০ দফা প্রস্তাবনা
১. ঢাকা কলেজের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও স্বাতন্ত্র্য সংরক্ষণ করতে হবে।
২. কলেজের অবকাঠামোসহ এক ইঞ্চি জমিও অন্য প্রতিষ্ঠানের নামে লিখে দেওয়া যাবে না।
৩. শিক্ষা-সংকোচনমূলক বাণিজ্যিক বা ব্যক্তিস্বার্থভিত্তিক কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না।
৪. অক্সফোর্ড, ফেডারেল বা অন্যান্য মডেল অনুসরণে নিয়ন্ত্রণকারী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা যেতে পারে; সাত কলেজ স্বমহিমায় স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষাকার্যক্রম চালাতে পারবে।
৫. উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিতে হবে; ‘নিজভূমে পরবাসী’ বানানোর ষড়যন্ত্র এড়িয়ে চলতে হবে।
৬. সিলেবাস সমাপ্তকরণ, পরীক্ষাগ্রহণ ও ফলাফল প্রকাশ নিশ্চিত করতে হবে; শিক্ষাজীবন সেশনজটমুক্ত করতে হবে।
৭. শিক্ষক-ছাত্র অনুপাত যৌক্তিক করতে শিক্ষকসংখ্যা বৃদ্ধি, বিভাগীয় কর্মকর্তা নিয়োগ ও নতুন চাহিদাসম্পন্ন বিভাগ চালু করতে হবে।
৮. শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি, আবাসন সুবিধা, ভর্তুকি, শিক্ষাঋণ এবং খেলাধুলা-সহশিক্ষা কার্যক্রমে সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে; শিক্ষার্থী বরাদ্দ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমান করতে হবে।
৯. শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক, প্রাক্তনশিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ ও সুশীলসমাজের মতামতের ভিত্তিতে টেকসই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।
১০. প্রায় ১,৭০,০০০ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন এবং শতবছরের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানগুলোকে হাইব্রিড বা অপ্রচলিত শিক্ষা কাঠামোর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্যবহার করা যাবে না; নিম্নবিত্ত পরিবারের, বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুযোগ সীমিত করা যাবে না।
বিডি প্রতিদিন/আশিক