প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উৎপাদনে যাচ্ছে চট্টগ্রামের শেখ রাসেল পানি শোধানাগার প্রকল্প। প্রায় ১৮০০ কোটি টাকার পরিশোধন ক্ষমতা সম্পন্ন এই প্রকল্প থেকে দৈনিক প্রায় ৯ কোটি লিটার বিশুদ্ধ সুপেয় পানি পাবেন নগরবাসী। গণভবন থেকে আগামীকাল রবিবার সকাল ১০টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উত্তর জেলার মদুনাঘাটের হালদার পাড় ঘেঁষে নির্মিত এই শেখ রাসেল পানি শোধানাগার প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। হালদার পরিবেশগত দিক বিবেচনায় এ প্রকল্পে বিশ্বমানের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম ওয়াসা সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, বিশ্বব্যাংক, বাংলাদেশ সরকার ও চট্টগ্রাম ওয়াসার যৌথ অর্থায়নে প্রায় ১৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে পরীক্ষামুলক ভাবে চালু হয় এ পানি শোধনাগারটি। হালদা নদী থেকে পানি তুলে ৬টি ধাপে পানি পরিশোধন শেষে সরবরাহ লাইনে দেওয়া হয়। বর্তমানে চট্টগ্রাম শহরে পানির চাহিদা রয়েছে ৪২ কোটি লিটার। আর সক্ষমতা রয়েছে ৩৬ কোটি লিটার। এর মধ্যে শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার থেকে ১৪ কোটি, মোহরা পানি শোধনাগার থেকে ৯ কোটি, শেখ রাসেল পানি শোধনাগার থেকে ৯ কোটি এবং নলকূপ থেকে ৪ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, হালদা নদী থেকে পানি উত্তোলন করি। তারপর এ পানি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষা করে কি পরিমাণ কেমিক্যাল মেশাতে হবে তা ঠিক করি। ক্যামিক্যাল মেশানোর পর ৬টি ধাপে পানি শোধন করা হয়। পানি শোধন শেষে সরবরাহ লাইনে দেওয়ার আগে আমরা ল্যাবে আবারও পরীক্ষা করি। এতে পানির সব মান ঠিক আছে কিনা যাচাই করা হয়। পরে তা সরবরাহ লাইনে দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ বলেন, বর্তমানে আমাদের যে সংযোগ রয়েছে এতে প্রায় ৯৫ শতাংশ লোক পানি পায়। আর পাইপ লাইনের ক্রুটির কারণেই কয়েক শতাংশ লোক পানি পান না। পাইপগুলো অনেক পুরোনো হওয়ায় সম্পূর্ণ প্রেসারে পানি সরবরাহ করতে পারি না। বর্তমানে ক্রুটিপূর্ণ পাইপলাইন অপসারণ করে নতুন সংযোগ বসানোর প্রক্রিয়া চলছে। আশা করছি ২০২১ সালের পরে চট্টগ্রামবাসীকে সম্পূর্ণ প্রেসারে পানি সরবরাহ করতে পারবো।
মদুনাঘাট পানি শোধনাগার প্রকল্প এলাকা সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে এরই মধ্যে নগরীতে পানি সরবরাহ করা শুরু করেছে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। সেখানে হালদা থেকে পানি উত্তোলনের পর চারটি ধাপে পানি পরিশোধন করা হচ্ছে। এ নিয়ে প্রকৌশলী ও রসায়নবিদরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। পরিশোধিত পানি পরীক্ষা করা হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ