২৬ জানুয়ারি, ২০২০ ২০:১৪

চট্টগ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিক্ষক সংকটেই চলছে পাঠদান

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিক্ষক সংকটেই চলছে পাঠদান

প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলীস্থ ইউনুচ মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে ১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ছাত্র সংখ্যা হচ্ছে ১ হাজার ১’শ জন। প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৫ জন। উত্তর পাহাড়াতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট ছাত্র সংখ্যা ৮’শ। এখানে শিক্ষক আছেন মাত্র ৫ জন। একইভাবে কোতোয়ালী এলাকার ন্যাশনাল প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাহাড়তলীর প্রাণহরি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ নগরী ও জেলার একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা বেশী থাকলেও প্রায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংকটে আছেন শিক্ষক।

শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, একজন শিক্ষকের বিপরীতে ছাত্র সংখ্যা ৪০ জন থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন ১’শ থেকে ২’শ ছাত্রের উপরে। এ অবস্থায় চট্টগ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার পাঠদানে যেমনি শিক্ষকদের অসুবিধা হচ্ছে, ঠিক তেমনিভাবে শিক্ষার মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টদের মাঝে। তবে কিছুদিনের মধ্যেই ১ হাজার ১’শ ০৩ জন নতুন শিক্ষক যোগদান করছেন। এসব শিক্ষকরা যোগ দিলেই শিক্ষক সংকটের কিছুটা কেটে উঠবে এবং শিক্ষা ব্যবস্থার আরো গতিশীল হবে বলে জানান দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলার মোট প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ২ হাজার ২’শ ৬৯টি। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষকসহ মোট কর্মরত শিক্ষক সংখ্যা রয়েছেন ১২ হাজার ২’শ ৬৩ জন। এখানে প্রধান শিক্ষক পদে শূন্য রয়েছেন ৪’শ ৪১ জন এবং সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে রয়েছেন ১ হাজার ২’শ ৩৫ জন।

রাউজান উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (টিও) মো. আবদুল কুদ্দুস বলেন, রাউজানে প্রধান শিক্ষক সংকট রয়েছেন ২৮ জন। সকরকারি শিক্ষক রয়েছেন ১’শ ৪৭ জন। সহকারি শিক্ষকদের মধ্যে নতুন নিয়োগে প্রায় ৬০ জনের মতো ইতিমধ্যে যোগদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সব প্রক্রিয়া শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব শিক্ষক রাউজানে যোগদান করলে শিক্ষার মান উন্নয়নে আরো গতিশীল হবে বলে জানান তিনি।

ডবলমুরিং থানার শিক্ষা কর্মকর্তা (টিও) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ হচ্ছে বিদ্যালয় পর্যায়ে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত ৪০/১ করার কথা থাকলেও এই থানায় ৪৩টা স্কুলের মধ্যে ৩০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের তুলনায় ছাত্র সংখ্যা বেশী। ফলে উক্ত অনুপাতটি বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে পড়ছেন।

চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী থানার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (টিও) মো. হারুন উর রশীদ বলেন, ২৯টি স্কুল রয়েছে। এখানে অধিকাংশ বিদ্যালয়েই শিক্ষক সংকট রয়েছে। এখানে ১ জন শিক্ষকের বিপরীতে প্রায় ১০০ জনের উপরে ছাত্র সংখ্যা রয়েছে। এখানে নতুন পদ সৃষ্টি করলে ছাত্রদের শিক্ষার মান উন্নত করার সহজ হবে।

চট্টগ্রাম জেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহীদুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, চট্টগ্রাম জেলায় মোট ১ হাজার ১’শ ০৩ জন নতুন শিক্ষক যোগদানের জন্য ইতিমধ্যে প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এসব শিক্ষকদের যোগদান প্রক্রিয়া শেষ হলেই সংকট অনেকাংশে কেটে আসবে বলে জানান তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষা কর্মকর্তা-শিক্ষক বলেন, শুধুমাত্র আমার থানা এলাকায় নয়, নগরী ও জেলার থানাগুলোতে শিক্ষক সংকট রয়েছে। শিক্ষক সংকটের কারণে ছাত্রদের পাঠদানেও কিছুটা অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে। বেশি ছাত্র থাকার কারণে স্কুলে পাঠদানকালে ছাত্ররা ভাল করে শুনতে পারেন না শিক্ষকদের কথা। দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান না হলে শিক্ষার মান দিন দিন ক্ষতির দিকে যাবে বলে জানান তারা।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর