দেশে প্রথমবারের মোবাইল অ্যাপ এর মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১’। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে দেশব্যাপী পরীক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। পরিচালিত কার্যক্রম নিয়ে মাঠ পর্যায় থেকে পরিসংখ্যান ব্যুরো বরাবরে ইতিবাচক মতামতও দেওয়া হয়েছে। পদ্ধতিটি এখন চূড়ান্ত বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছে। অ্যাপটির নাম দেওয়া হয়েছে এইচএলএস (হাইসহোল্ড লিস্টিং সিস্টেম)। আগামী বছরের ২ জানুয়ারি থেকে ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১’ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার কথা।
চট্টগ্রাম জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম আদম শুমারি হয় ১৯৭৪ সালে। এরপর ১৯৮১ সালে দ্বিতীয়, ১৯৯১ সালে তৃতীয়, ২০০১ সালে চতুর্থ এবং ২০১১ সালে পঞ্চম আদমশুমারি (বর্তমানে জনশুমারি ও গৃহগণননা) অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সবগুলো শুমারি অনুষ্ঠিত হয় ফরম পূরণের মাধ্যমে। এবার প্রথমবারের মত মোবাইলে অ্যাপের মাধ্যমে জনশুমারি অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রস্তুতি চলছে। এ নিয়ে পরিসংখ্যান ব্যুরো দেশের ৩২টি এলাকার ৩ হাজার ৮৪০টি খানা (প্রতিটিতে ১২০টি করে) পরীক্ষামূলক জরিপ পরিচালনা করে। চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি এবং এনায়েত বাজার এলাকার ১২৮টি পরিবারে জিজ্ঞাসা করা হয়- ডিজিটাল নাকি এনালগ পদ্ধতিতে জরিপ পরিচালনা করা হবে। গত ১৮ জানুয়ারি পরীক্ষামূলক কাজটি শেষ হয়।
চট্টগ্রাম জেলার পরিসংখ্যান অফিসের উপ পরিচালক মোহাম্মদ ওয়াহিদুর রহমান বলেন, ‘অ্যাপ এর মাধ্যমে জনশুমারি পরিচালনায় নগরের কোতোয়ালি এবং এনায়েত বাজার এলাকার ১২৮টি পরিবারে জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ মানুষ অ্যাপ’র মাধ্যমে জরিপ পরিচালনায় সম্মতি প্রকাশ করেছে। জরিপের ফলসহ একটি প্রতিবেদন পরিসংখ্যান ব্যুরোতে পাঠিয়েছি। এখন বিষয়টি ঢাকায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের মনে হয়েছে, অনেকের কাছেই অ্যাপটি পছন্দের। কারণ এখন সবার হাতে হাতে স্মার্ট ফোন। ফলে অ্যাপের মাধ্যমে সহজ ও দ্রুত কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। তবে অ্যাপ দিয়ে নগর এলাকায় কাজ করার সম্ভাবনা বেশি।’
জানা যায়, সনাতন পদ্ধতিতে ফরম পূরণের মাধ্যমে জরিপ করার ক্ষেত্রে নানা সমস্যা তৈরি হয়। এর মধ্যে আছে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা থেকে পূরণকৃত ফরম জেলা কার্যালয়ে এনে একত্রিত করার সময় অথবা পরে ফরম নষ্ট হওয়া, হারিয়ে যাওয়া এবং এলোমেলো হয়ে যাওয়াসহ নানা সমস্যা তৈরি হয়। একইভাবে জেলা অফিস থেকে ঢাকায় নেওয়ার পরও কাগজপত্র হারিয়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে। কিন্তু অ্যাপের মাধ্যমে জরিপ পরিচালিত হলে এসব সমস্যা তৈরি হওয়ার সুযোগ থাকে না। ফলে অ্যাপের মাধ্যমে জরিপ পরিচালনাটি সহজ বলে মনে করছেন অনেকেই।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার