ওরা রিক্সা চোর। নগরীর অলিগলি ঘুরে বেড়ায় রিকসা চালক ও রিকসার খোঁজে। সুযোগ পেলেই রিকসা নিয়ে দেয় চম্পট। গত দশ বছরে শুধুমাত্র চট্টগ্রাম নগরী থেকে রিকসা চুরি করেছে হাজারের উপরে। অবশেষে দুর্ধর্ষ রিকসা চোর চক্রের অন্যতম হোতা জয়নাল আবেদিন ধরাশায়ী হয়েছে পুলিশের বুনন করা জালে।
এসময় গ্রেফতার করা হয় তার অন্যতম সহযোগী আবুল হোসেনকে। তাদের কাছ থেকে চোরাই ১৮টি রিকসা জব্দ করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে নগরীর খুলশী থানাধীন সৃজনী মাঠ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
খুলশী থানার ওসি প্রণব চৌধুরী বলেন, ‘রিকসা চুরির এ চক্রটি অভিনব কায়দায় মুহূর্তের মধ্যে রিকসা নিয়ে চম্পট দেয়। গ্রেফতার হওয়া জয়নাল ও তার সহযোগী গত এক দশকে কমপক্ষে হাজার রিকসা চুরি করেছে। এ ধরণের বেশ কয়েকটি চক্র নগরীতে সক্রিয় রয়েছে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
জানা যায়, রিকসা চোর চক্রের সদস্যরা নগরীর অলিগলি ঘুরে বেড়ায় দেখতে সহজ সরল রিকসা চালক ও খালি রিকসার খুঁজে। দেখতে সহজ সরল কোন রিকসা চালককে দেখলে নির্ধারিত গন্তব্যে যাওয়ার জন্য ভাড়া করে। রিকসাতে উঠার পর পরই গল্প শুরু করে চালকের সাথে। নির্জন কোন জায়গায় গেলে রিকসা চালকের হাতে একশ কিংবা পাঁচশ টাকার নোট ধরিয়ে পান কিংবা সিগারেট আনতে বলে। সহজ সরল ওই রিকসা চালক পান বা সিগারেট আনতে গেলে মাত্র দুই তিন মিনিটের মধ্যে রিকসা চোর চক্রের সদস্যরা দেয় চম্পট। পরবর্তীতে ওই রিকসা নিয়ে যাওয়া হয় নির্ধারিত গ্যারেজে। ওইখান থেকে তিন থেকে চার হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়া হয় চুরি করা ওই রিকসা। এছাড়া খালি পড়ে থাকা রিকসাও টাগের্টে থাকে তাদের। কোন খালি রিকসা পেলে সুযোগ বুঝে তা নিয়ে পালিয়ে যায় এ চোর চক্রের সদস্যরা। চট্টগ্রাম নগরীতে এ ধরণের কমপক্ষে ১০টি চোর চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। নগরীর রিকসাচালকরা বসবাস করে এমন এলাকায় রয়েছে তাদের বিচরণ। তার মধ্যে রয়েছে নগরীর বাকলিয়া, হালিশহর, পতেঙ্গা, আকবরশাহ এবং বন্দর এলাকা।
খুলশী থানার ওসি প্রণব চৌধুরী বলেন, নগরীর সবচেয়ে বড় রিকসা চোর চক্রের নেতৃত্বে রয়েছে জয়নাল আবেদীন। এক দশক ধরেই সে চোর চক্রের নেতৃত্বে রয়েছে। তার বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় ৫টি মামলা রয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ জগতের অনেক অজানা তথ্য পাওয়া যাবে।
বিডি-প্রতিদিন/সিফাত আব্দুল্লাহ