২৯ নভেম্বর, ২০২০ ১৯:১৯

চমেক হাসপাতালের চার হিসাব জব্দ করল দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চমেক হাসপাতালের চার হিসাব জব্দ করল দুদক

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট চারটি ব্যাংক হিসাবে থাকা ২৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৯৬ টাকা জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রবিবার দুপুরে দুদক চট্টগ্রাম অঞ্চল-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক শরিফ উদ্দিন চিঠি দিয়ে অগ্রণী ব্যাংক হাসপাতাল শাখার চারটি একাউন্ট জব্দ করেন।

দুদক চট্টগ্রাম অঞ্চল-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক শরিফ উদ্দিন বলেন, ‘চমেক হাসপাতালের চারটি ক্যান্টিনের ব্যাংক হিসাব থেকে ২৯ লাখ ৪৬ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে। এর আগে চমেক হাসপাতাল ও জেনারেল চট্টগ্রামের স্বাস্থ্যখাতের অনিয়ম-দুর্নীতি ও টেন্ডারবাজির কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দুদকে জমা আছে। 

দুদক প্রধান কার্যালয়ের সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা মতে সেগুলোর অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। অনুসন্ধানের অংশ হিসাবে এ দুই প্রতিষ্ঠানের কাছে নির্দিষ্ট অভিযোগগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আছে এমন নথি তলব করে তদন্ত চলছে।’    

চমেক হাসপাতাল অগ্রণী ব্যাংক শাখার ম্যানেজার লক্ষ্মণ চন্দ্র দাশ বলেন, ‘তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী কল্যাণ তহবিলের দুটি, স্টাফ নার্সিং কল্যাণ তহবিল ও মেডিকেল স্টাফ কো-অপারেটিভ সোসাইটির হিসাবের সব তথ্য দুদকে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া দুদকের নির্দেশনা মতে এই হিসাবগুলোতে সব ধরনের লেনদেন বন্ধ রাখা হয়েছে।’  

জানা যায়, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখার  সাধারণ সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ ফয়সল ইকবাল চৌধুরীর ‘টেন্ডারবাজি,  চাঁদাবাজি, বদলি, নিয়োগ বাণিজ্য, ক্লিনিক ব্যবসা, কমিশন ব্যবসাসহ জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ’ শীর্ষক অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে নথি তলব করা হয়েছে। 

তাছাড়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের হিসাবরক্ষক মো. শাহজাহান, ওয়ার্ড মাস্টার রাজিব, অফিস সহকারী মঈন উদ্দিন এবং জেনারেল হাসপাতালের হিসাবরক্ষক মো. ফোরকানের বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়। একই সঙ্গে চমেক হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগ ও স্টোরের সব নথিও তলব করা হয়। 

তাছাড়া, এ দুই হাসপাতালে গত ১১ বছরে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগকৃত জনবলের তালিকাও চাওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ও জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে ২০০৮ সাল থেকে টেন্ডারের ভিত্তিতে যত প্রকল্প বাস্তবায়ন ও সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হয়েছে সবগুলোর নথি তলব করেছে দুদক। একই সঙ্গে সরকারি এ দুই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে হিসাব বিভাগ ও আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নিয়োগে যুক্তদের ব্যাপারে তথ্য তলব করা হয়েছে।  

অভিযোগ আছে, চট্টগ্রামের স্বাস্থ্যখাতের অনিয়ম-দুর্নীতি, বদলি ও নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, ক্লিনিক ব্যবসা এবং কমিশন বাণিজ্য নিয়ে একটি চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ঢাকা কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়মের হোতাদের বিরুদ্ধে মামলা-তদন্ত দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

কিন্তু চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য খাতের মাফিয়াদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো উদ্যোগ বা তদন্ত হয়নি। ফলে এসব দুষ্ট চক্রের হোতারা অধরাই থেকে যাচ্ছে। তবে এবার চট্টগ্রামের একাধিক ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য খাতের ‘পাকাপোক্ত দুর্গে’ হানা দিয়েছে দুদক।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর